‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরাও : রীভা গাঙ্গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা মহামারীতে ভারতকে ‘আত্মনির্ভর’ গড়ে তোলার প্রায় ২১ লাখ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই প্যাকেজে প্রকল্পটির নাম দিয়েছেন ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ। তিনি বলেছেন, ‘এই প্রকল্প ভারতকে অংশীদার দেশগুলোর সহযোগিতায় বৈশ্বিক মান শৃঙ্খলের অংশ হতে সহায়তা করবে। এটি ভারতীয় ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের জন্য সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির বিশাল সুযোগ উন্মুক্ত করবে।’

আজ মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশন ও ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব : কভিড-১৯ পরবর্তী বিশ্বে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ’ বিষয়ক ওয়েবিনারটিতে শতাধিক শিল্প নেতারা অংশ নেন।

রীভা গাঙ্গুলি দাশ আশা প্রকাশ করে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন দুর্দান্ত পর্যায়ে এবং রেল ও অভ্যন্তরীণ নৌপথে উভয় দেশের গৃহীত সাম্প্রতিক যোগাযোগ পদক্ষেপের ফলে বাণিজ্য ব্যয় হ্রাস করতে সহায়তা করবে।

রীভা গাঙ্গুলি দাশ আরো বলেন, তাদের স্থিতিশীল অর্থনীতি এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক পরিবেশের ফলে উভয় দেশই কেবল বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি নতুন সুযোগগুলো ব্যবহার করতে সক্ষম হবে। তিনি চমৎকার উৎপাদন পরিবেশ, তরুণ জনগোষ্ঠী ও অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ ইত্যাদি ব্যবহার করে তৃতীয় দেশগুলোতে রফতানির পাশাপাশি সহযোগিতা এবং যৌথ উদ্যোগের সুযোগগুলো অনুসন্ধানের জন্যে ভারতীয় ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

ভারতীয় হাই কমিশনার তার দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে প্রবর্তিত ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পের প্রতি আলোকপাত করে বলেন, আত্মনির্ভর ভারত অভিযান পাঁচটি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে রচিত - অর্থনীতি, অবকাঠামো, প্রযুক্তি-চালিত ব্যবস্থা, তরুণ জনগোষ্ঠী এবং চাহিদা। ২১ ট্রিলিয়ন টাকার একটি উদ্দীপক প্যাকেজ অবকাঠামোগত উন্নয়নের গতি বাড়িয়ে দেবে, গ্রামীণ অর্থনীতি ও কুটির শিল্পগুলিকে সহায়তা করবে, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে উৎসাহ দেবে, বিদেশী ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ভারতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ইত্যাদি ত্বরান্বিত করবে। 

আত্মনির্ভর ভারত এমন শিল্প ও খাতকে চিহ্নিত এবং প্রচার করবে যেগুলো বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক আকার ধারণ করার মত সক্ষমতা অর্জন করতে পারে এবং সম্ভাবনাময়। এটি ভারতকে অংশীদার দেশগুলির সহযোগিতায় বৈশ্বিক মান শৃঙ্খলের অংশ হতে সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশ যেসব নতুন সুযোগ পেয়েছে তা কাজে লাগানোর  প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের ফলে ভারত ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের বড় সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও তিনি শক্তিশালী বাণিজ্য নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে আরও বিনিয়োগ, সংহতি, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জ্ঞান বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে প্রাণ গ্রুপ, ইফাদ গ্রুপ, এসবিআই বাংলাদেশ, ইন্দোফিল এবং শর্থী এন্টারপ্রাইসের শিল্প নেতারা বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন সুযোগ এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র জুড়ে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন