ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা আমাকেও পীড়া দেয় : ওবায়দুল কাদের

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ

দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ার ফলে দিন দিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে সেবার চাপ। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা পীড়া দেয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পন্ন করে লাইসেন্স প্রদানের আহ্বান জানান। 

গতকাল সোমবার (১০ আগস্ট) ময়মনসিংহ সড়ক জোন, বিআরটিএ ও বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন করতে হলে বিআরটিএ এর জনবল বৃদ্ধিও জরুরি। বিআরটিসির সমস্যাও নতুন নয়।’ এই সঙ্কট থেকে উত্তরণে মন্ত্রণালয়ের বিআরটিসি শাখা কী পদক্ষেপ নিয়েছে? প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী। এসময় যেখানে কথা বলা দরকার সেখানে কথা বলার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত সচিবকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দ্রুততম সময়ে কাজ সম্পন্ন করে লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। যেন জনদুর্ভোগ না হয়।’

সওজের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে দীর্ঘদিন থেকে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) ও সহকারী প্রকৌশলীর (এই) ঘাটতি রয়েছে। শুনেছি অর্গানোগ্রাম হালনাগাদের কাজ চলছে। সওজের জনবল বৃদ্ধির বিষয়টি এগোচ্ছে না কেন? এ প্রশ্নও রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর।

তিনি বলেন, ‘আমি নিজে জনপ্রশাসনের মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকেও বলেছি। এটিতো সওজের বিষয় নয় এটা মন্ত্রণালয়ের বিষয়। সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা এটি জনপ্রশাসনসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি আদায়ে এপর্যন্ত কী কাজ করছেন? মাসের পর মাস ঘুরতে হবে কেন? যেখানে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা দরকার। এরপর সম্ভব না হলে মন্ত্রী নিজে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

‘মন্ত্রণালয়ের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে’ যে কারো সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত বলে জানান মন্ত্রী। কিন্তু জনবল বৃদ্ধির ফাইল ঝুলে থাকবে কেন? প্রশ্ন রাখেন তিনি। তিনি বলেন, ‘দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ার ফলে দিন দিন যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে সেবার চাপ। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য মানুষের দীর্ঘ অপেক্ষা আমাকেও পীড়া দেয়’। বিষয়টি তদারকির জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান মন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ে যিনি তদারকি করেন তাকেও এই নির্দেশ দেন। 

জানা গেছে, ইতিমধ্যেই দেশের প্রতিটি সড়ক জোনের সাথে মতবিনিময় শুরু করেছেন মন্ত্রী। এই ধারাবাহিকতায় ১০ আগস্ট ময়মনসিংহ সড়ক জোনের সাথে মতবিনিময় হয়। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি সভায় গুরুত্বের সঙ্গে যে বিষয়টি তুলে ধরছি, তা হলো সড়ক নির্মাণে গুণগত মান। এ বিষয়টিকে আর অবহেলা করা যায় না। এক শ্রেণীর ঠিকাদার ও প্রকৌশলীর যোগসাজসের ফলে সড়কের খারাপ মানের হচ্ছে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত নিম্নমানের এবং চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করায় অল্প সময়ের মধ্যেই সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এক পসলা বৃষ্টিতেই সড়ক বেহাল হয়ে যাচ্ছে।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আর অবহেলা নয়, দেশকে  ভালেবেসে নিজের সক্ষতমতার সবটুকু দিয়ে কাজ করুন। আপনার সাফল্যের মাঝেই মন্ত্রণালয়ের সাফল্য, দেশের সাফল্য।’

মন্ত্রী বলেন, ‘সড়ক অবকাঠামো খাতে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ এবং কাজের পরিধি দিন দিন বাড়ছে। সরকারের উন্নয়ন বাজেটও বাড়ছে। তার সথে তাল মিলিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জনবল ও নির্মাণ সরঞ্জাম সংগ্রহে কতটুকু সক্ষমতা অর্জন করেছে সেটিও বিবেচনায় আনতে হবে।’

অনুষ্ঠানে  সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কাজী শাহরিয়ার হোসেন, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব চন্দন কুমার দে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান, ময়মনসিংহ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, ময়মনসিংহ সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ.কে এম আজাদ রহমান, জামালপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীরণ রায়, ময়মনসিংহ ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান, জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার শরীফুল ইসলাম, নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম ও কিশোগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম,  বিআরটিএ সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল খালেক, সওজ ময়মনসিংহ সদরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম, বিআরটিসি ময়মনসিংহ ডিপো ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কারখানা বিভাগ মো. আশরাফুল আলমসহ প্রকৌশলীসহ বিআরটিএ’র কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন