ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাংলাদেশীরা অবৈধ

জরিমানার বিনিময়ে দেশে ফেরার সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ বিদেশীদের ফেরাতে মালয়েশিয়া সরকার ঘোষিতব্যাক ফর গুড (বি-ফোর-জি)’ কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। তবে এর পরও দেশটিতে রয়ে গেছেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী; ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় যারা এখন অবৈধ হয়ে পড়েছেন। এবার নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানা দিয়ে এসব অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

জানা গেছে, জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন ছাত্র, পর্যটক ভ্রমণ ভিসায় গিয়ে অবৈধ হওয়া বিদেশীরা। তবে সুযোগ শুধু বাংলাদেশীদের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের অবৈধ হয়ে পড়া নাগরিকরাও এর আওতায় থাকবেন। গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।

কুয়ালালামপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক খাইরুল দাজায়মি দাউদ বলেন, মালয়েশিয়ায় যারা এক বছরের কম সময় অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তারা হাজার রিঙ্গিত যারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে বসবাস করছেন তারা হাজার রিঙ্গিত জরিমানা দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে জরিমানা দিয়ে বিশেষ পাস (স্পেশাল পাস) সংগ্রহ করতে হবে। আর ইমিগ্রেশন থেকে পাস সংগ্রহের সময় অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকদের উড়োজাহাজের রিকনফার্ম টিকিট দেখাতে হবে। পাশাপাশি দেখাতে হবে করোনা নেগেটিভ সনদ।

এর আগে গত বছর আগস্ট থেকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ অবৈধ প্রবাসীদের ফেরাতেব্যাক ফর গুড (বি-ফোর-জি)’ কর্মসূচির আওতায় সাধারণ ক্ষমা কার্যকর করা শুরু করে। এর মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ ডিসেম্বর। ওই সময় সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে অবৈধ হয়ে পড়া অনেক বাংলাদেশী দেশে ফেরেন। 

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে অন্য দেশের মতো মালয়েশিয়ার অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতির শিকার।

ফলে স্থানীয় কর্মীদের কাজের পরিধি বাড়াতে প্রবাসী কর্মী কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বিদেশী শ্রমিকদের কাজের জন্য মাত্র তিনটি খাত উন্মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। ফলে দেশটিতে বাংলাদেশীদের জন্য কাজের ক্ষেত্র আরো সংকুচিত হয়ে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, মালয়েশিয়া সরকারের নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী এখন থেকে শুধু নির্মাণকাজ, কৃষিকাজ বাগানের কাজে বিদেশী শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হবে। অন্য খাতগুলোতে কাজ করবেন মালয়েশীয়রাই।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সেখানে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশী কর্মরত আছেন, যাদের বড় অংশই শ্রমিক। জনশক্তি, কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় গেছেন প্রায় এক লাখ কর্মী। ২০১৮ সালেও দেশটিতে গেছেন লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭  কর্মী। ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশী কর্মী নেয়া বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর দেশটিতে গেছেন মাত্র ৫৪৫ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন