একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। আজ রোববার সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তালিকা করতে একটি উপ-কমিটিও গঠন করেছে সংসদীয় কমিটির ।
এছাড়া বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে, ‘বীর’ শব্দটি লেখার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের প্রস্তাব করেছে সংসদীয় কমিটি। মন্ত্রণালয় তাদের এই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে।
রাজাকারদের তালিকা তৈরিতে গঠিত উপ-কমিটিতে ছয় জন সদস্য রয়েছেন। উপ-কমিটির আহ্বায়ক সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। বাকি সদস্যরা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, এবি তাজুল ইসলাম ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল এবং মোসলেম উদ্দিন আহমেদ।
কমিটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মধ্যে যারা সংসদ সদস্য আছেন তাদের সহযোগিতা নেবে। রাজারকারদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে যুদ্ধকালীন কমান্ডার এবং উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড থেকে।
গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য নিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের একটি তালিকা প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পরে তা বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ বছর জানুয়ারি মাসে সংসদেও এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে। খোদ সরকারি দলের সদস্যরাই এনিয়ে মন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর হোন। সেসময় মন্ত্রী নতুন করে তালিকা তৈরির কাজের কথাও জানান।
কমিটির বৈঠক শেষে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের জানান, এবার সংসদীয় কমিটি তালিকা তৈরি করবে। একাজে একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের মধ্যে যারা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আছেন তাদেরকে আমরা কাজে লাগাবো। আর তথ্য নেয়া হবে যুদ্ধকালীন কমান্ডার এবং উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড থেকে।
তিনি বলেন, কোনো একক কর্তৃপক্ষ তালিকা করবে না। কমান্ডাররা তালিকা তৈরি করবেন। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এমপিদের দায়িত্ব দেয়া হবে। তারা সমন্বয় করবেন।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি শাজাহান খান আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নামের আগে বীর লিখতে হবে। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করবে।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার মোট ২৪টি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এবং আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার সুপারিশ করা হয়।
শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এবি তাজুল ইসলাম এবং মোছলেম উদ্দিন আহম্মদ বৈঠকে অংশ নেন।