বঙ্গমাতা বাঙালির সব সংগ্রামে অবদান রেখে গেছেন —তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক . হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুকে ছায়ার মতো অনুসরণ করেছেন, সেরা পরামর্শ দিয়েছেন এবং বাঙালির সব সংগ্রাম সফলতায় তার অবদান মিশে আছে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতির পিতার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি কথা বলেন।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপির পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

বক্তব্যের শুরুতেই জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গমাতাকে একইসঙ্গে শোকের মাস আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবারের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে . হাছান বলেন, আজ এমন এক মহিয়সী নারীর জন্মদিন, যিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী নন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জননী নন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে নিরবে-নিভৃতে প্রচারবিমুখ হয়ে যিনি অবদান রেখেছেন, জাতিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সন্ধিক্ষণে পৌঁছে স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকা কোনোদিন জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি, তারই জন্মদিন আজ।

তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে, দুর্যোগে অনেক নেতা অনেক সময় ভোল পাল্টেছে, পিছু হটেছে, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, ঠিক পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আর সেই সময় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সবচেয়ে ভালো পরামর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে হাজির হয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস যেমন একে অন্যের কথা ছাড়া লেখা যায় না, তেমনি বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা লিখতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কথা অবিচ্ছেদ্যভাবেই এসে যায়।

তিনি বলেন, বঙ্গমাতার মতো একজন অসম সাহসী, ধৈর্যশীল, সৎ পরামর্শদাতা স্ত্রী পাশে থাকার কারণেই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে, বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জাতির জন্য লড়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে আমার ধারণা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির জন্য উৎসর্গীকৃত জীবনে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে একনাগাড়ে সংসারধর্ম পালন করা হয়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকার সময়গুলোয় বঙ্গমাতাই পরম যত্ন বিচক্ষণতায় সংসার দল উভয়ই আগলে রেখেছেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, তখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল . শতাংশ, যা আবার অর্জন করতে আমাদের ৪০ বছর লেগেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কৃষিনীতিতে ১৯৭৫ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য অতিরিক্ত ছিল। অর্থাৎ, বঙ্গবন্ধুকে তখনই হত্যা করা হয়, যখন তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সফলভাবে পুনর্গঠন করছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে দেশ আজ উন্নয়নে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যেত।

তিনি বলেন, নানা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে করোনা মোকাবেলায় গত পাঁচ মাসে একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহারও বিশ্বে অন্যতম সর্বনিম্ন।

বিএনপি নেতাদেরকে মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসে টিভি আর অনলাইনে উঁকি দিয়ে সমালোচনা বাদ দিয়ে আর ভুল ধরা পার্টি লোকের মতো টক শোতে টিভির পর্দা ফাটিয়ে ফেলা পরিহার করে সবার সঙ্গে দেশ গড়ায় অংশ নেয়ার আহ্বান জানান . হাছান মাহমুদ।

সভা শেষে বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্য, দেশ জাতির মঙ্গল কামনা করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন