হংকং-চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ভাঁড়ামো বলল চীন

বণিক বার্তা ডেস্ক

শুক্রবার হংকং চীনা কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তা কার্যত ভাঁড়ামির শামিল বলে জানিয়েছে হংকংয়ে চীনের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষ কার্যালয়। গতকাল হংকংয়ে চীনের লিয়াজোঁ অফিস থেকে বলা হয়, ওয়াশিংটনের পদক্ষেপে তারা মোটেই ভীত নয়। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে পৃথকভাবেনির্লজ্জ ঘৃণ্যবলে অভিহিত করেছে হংকং সরকার। খবর রয়টার্স।

মূলত জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপের মধ্য দিয়ে চীন হংকংয়ের রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব করেছে বলে অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর কাজে ভূমিকা রাখার অভিযোগেই ওয়াশিংটন গত শুক্রবার চীনের লিয়াজোঁ অফিসের প্রধান লুও হুইনিং হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামসহ বর্তমান সাবেক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই এরই মধ্যে সংকটে থাকা মার্কিন-চীন সম্পর্ক আরো অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।

এক বিবৃতিতে লিয়াজোঁ অফিস থেকে বলা হয়, হংকংয়ে চীনবিরোধী বিশৃঙ্খলা সমর্থনের লক্ষ্যে মার্কিন রাজনীতিবিদদের অসাধু উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তাদের ভাঁড়সদৃশ কর্মকাণ্ড সত্যিকার অর্থেই হাস্যকর। তাদের ধরনের হুমকি প্রদর্শনে চীনের মানুষ ভীত নয়।

চীননিয়ন্ত্রিত হংকংয়ে চীনের জ্যেষ্ঠতম কর্মকর্তা লুও বলেন, তার ওপর ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের মানে হলো, তার নিজের দেশ হংকংয়ের জন্য যা করা প্রয়োজন, এতদিন তিনি ঠিক তাই করে আসছেন। লুও লাম ছাড়াও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছেন হংকংয়ের পুলিশ কমিশনার ক্রিস ট্যাং, সাবেক পুলিশ কমিশনার স্টিফেন লো, হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব জন লি তেরেসা চেং।

বিষয়ে ট্যাং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে গতকাল বলেন, দেশের হংকংয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার দায়িত্ব। দায়িত্ব পালনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশী নিষেধাজ্ঞার কোনো মানে নেই।

নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে এসব কর্মকর্তার সম্পদ স্থগিত করে দেয়া হবে। এর ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ধরনের ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। বিষয়ে বেইজিং-সমর্থিত নেতা লাম আগেই স্থানীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তার কোনো সম্পদ নেই।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, বিতর্কিত নিরাপত্তা আইন হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব করেছে। এর মধ্য দিয়ে কার্যত চীনের বিরুদ্ধে যায় এমন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বাকস্বাধীনতায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির অজুহাতে সেপ্টেম্বরের নির্বাচন এক বছরের জন্য স্থগিত করেছে হংকং কর্তৃপক্ষ। তবে গণতন্ত্রপন্থীরা বলছেন, নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার জন্য সত্যিকার অর্থেই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রকৃত কারণ কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ঠিক সূত্র ধরেই ওয়াশিংটনের দাবি, হংকংয়ের অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া স্বাধীনতায় যে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে, তার সর্বশেষ উদাহরণ হলো নির্বাচন স্থগিত করা।

মূলত নিরাপত্তা আইন জারির মধ্য দিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে বেশ সমালোচনার শিকার হচ্ছে চীন। তাদের মতে, আইন নগররাষ্ট্রটির নাগরিক স্বাধীনতা মানবাধিকার ব্যাপকভাবে খর্ব করবে। নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক এখন অবনতির দিকে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র হংকংয়ের বিশেষ বাণিজ্য সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে নগররাষ্ট্রটির সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি বাতিল করেছে কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন