ডলারের অবস্থান নিয়ে উদ্বেগের কিছু দেখছে না জেপি মরগান

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সহায়ক মুদ্রানীতি গ্রহণের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের মান কিছুটা পড়ে গেছে। আরো কিছুদিন ডলারের পতন অব্যাহত থাকলেও মুদ্রাটির দীর্ঘমেয়াদি অবনমন দেখছে না মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগান চেজ অ্যান্ড কোম্পানি। দীর্ঘমেয়াদি অবনমন বলতে জেপি মরগান বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের অবস্থান হারানোকে বুঝিয়েছে, দিন দশেক আগে যে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল আরেক মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ। ব্লুমবার্গ।

শুক্রবার এক নোটে জেপি মরগানের মুদ্রাবিষয়ক বিশ্লেষক ড্যানিয়েল হুই, পল মেগিয়েসি হওয়ান দুরান-ভেরা লিখেছেন, ডলারের স্ট্রাকচারাল ডিক্লাইন নিয়ে এর আগে যে ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে, আমরা তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। ডলারের ব্যাপক দীর্ঘমেয়াদি অবনমন দেখার আশঙ্কা খুব একটা নেই। অবনমনের মধ্যে রয়েছে ডলারের রিজার্ভ কারেন্সির মর্যাদা হারানো এবং এর বিপরীতে ইউরোর মান বেড়ে যাওয়া।

গত মাসের শেষের দিকে গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছিল, ডলারের মান যেভাবে কমছে, তাতে এটি বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সির মর্যাদা হারাতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষকরা জানান, নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ডলারের অবমূল্যায়নের আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার বৈশ্বিক বাজারে ডলার তার আধিপত্য হারাতে পারে।

গোল্ডম্যান অবশ্য সে সময় বলেছিল, তাদের আশঙ্কা যে সত্যি হবেই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে সব আর্থিক সংকটের সময়ই এমন আশঙ্কা উঁকি দেয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। গোল্ডম্যানের বিশ্লেষক জেফ্রেই কুরি তার দল বলে, যখন অন্য সব বিনিয়োগ সম্পদের ওপর আস্থা উঠে যায়, তখন স্বর্ণকেই নিরাপদ সম্পদ মনে করা হয়। বিশেষ করে বর্তমানের মতো পরিস্থিতিতে, যখন বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের মুদ্রার মান কমাচ্ছে এবং প্রকৃত সুদের হার রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনছে। তারা আরো বলে, এখন যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের টিকে থাকার বিষয়টি আসলেই হুমকির মুখে রয়েছে।

ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল সেটলমেন্টসের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা বিশ্বে মোট মুদ্রা লেনদেনের ৮৮ শতাংশই সম্পন্ন হয় ডলারে। আর বর্তমানে বিশ্বে বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের ৬২ শতাংশ দখল করে আছে ডলার। অবশ্য এক্ষেত্রে ডলারের অংশীদারিত্ব খানিকটা কমেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭০-এর দশকে বৈদেশিক মুদ্রায় রিজার্ভের ৮৫ শতাংশই ডলারে রাখা হতো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন