এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ

আজ থেকে ফের ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডেঙ্গু থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দিতে আজ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে আবারো বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান (চিরুনি অভিযান) শুরু হতে যাচ্ছে। অভিযান ২০ আগস্ট পর্যন্ত চলমান থাকবে।

এর মধ্যে ১১ আগস্ট জন্মাষ্টমী, ১৪ আগস্ট শুক্রবার এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে চিরুনি অভিযান বন্ধ থাকবে। অভিযানের কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলমান থাকবে। তবে অঞ্চল বা ওয়ার্ডভেদে প্রতিদিনের চিরুনি অভিযান শুরু শেষ করার সময় পরিবর্তন হতে পারে।

ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ডেঙ্গু সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আজ থেকে অনুষ্ঠেয় চিরুনি অভিযান সম্পর্কে নগরবাসীকে অবহিত করতে এরই মধ্যে সিটির সর্বত্র মাইকিং করা হয়েছে।

চিরুনি অভিযান সর্বাত্মকভাবে সফল করতে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, গণমাধ্যম কর্মী এবং ডিএনসিসির সর্বস্তরের জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের স্থাপনার ভেতরে-বাইরে, আশপাশে তিনদিনের বেশি জমা পানি থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষিত নই। নগরবাসীর প্রতি আহ্বান, বাড়ি বা স্থাপনার ভেতরে, বাইরে, আশপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে এখনই ফেলে দিন। তিনদিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন। ডেঙ্গু থেকে আপনি সুরক্ষিত থাকুন, আপনার পরিবার, শহর রাষ্ট্রকে সুরক্ষিত রাখুন।

সূত্র জানায়, আগে পরিচালিত চিরুনি অভিযানের মতো এবারের চিরুনি অভিযান পরিচালনার উদ্দেশ্যে সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। আবার প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের একটি সেক্টরে অর্থাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। এভাবে আগামী ১০ দিনে সমগ্র ডিএনসিসিতে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রতিটি সাবসেক্টরে ডিএনসিসির চারজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী একজন মশক নিধনকর্মী, অর্থাৎ প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন ৪০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ১০ জন মশককর্মী ডিএনসিসির আওতাধীন বিভিন্ন বাড়ি, স্থাপনা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোথাও এডিস মশার লার্ভা আছে কিনা, কিংবা কোথাও তিনদিনের বেশি পানি জমে আছে কিনা, অথবা ময়লা-আবর্জনা আছে কিনা, যা এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক, তা পরীক্ষা করবেন।

চিরুনি অভিযান চলাকালে ডিএনসিসির তিনজন কীটতত্ত্ববিদ, স্বাস্থ্য বিভাগ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা দিকনির্দেশনা দেবেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নয়জন কীটতত্ত্ববিদ এবং ছয়জন চিকিৎসক ডিএনসিসির সঙ্গে কাজ করবেন।

আগের চিরুনি অভিযানের মতো এবারের চিরুনি অভিযান চলাকালে যেসব বাড়ি বা স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা কিংবা এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যাবে, তার ছবি, ঠিকানা, মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য তাত্ক্ষণিকভাবে একটি অ্যাপে সংরক্ষণ করা হবে। ফলে চিরুনি অভিযান শেষে ডিএনসিসির কোন কোন এলাকায় এডিস মশা বংশবিস্তার করে তার একটি ডাটাবেজ তৈরি হবে। ডাটাবেজ অনুযায়ী পরবর্তী সময়েও তাদের মনিটর করা হবে।

চিরুনি অভিযানের সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালিত হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে চিরুনি অভিযানের মাধ্যমে পর্যন্ত লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৬টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে হাজার ৬৮৬টিতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পর্যন্ত ৪৮ লাখ ১২ হাজার ৫১০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন