সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ইস্যু করে কেউ কেউ সরকার হটানোর দিবাস্বপ্ন দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের শিকড় এ দেশের মাটির অনেক গভীরে। গুজব রটিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে কোনো লাভ হবে না।
গতকাল সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি অশুভ চক্র নানা ইস্যুতে গুজব রটনা ও অপপ্রচারে লিপ্ত। সাবেক সেনা সদস্য মেজর সিনহা রাশেদের মর্মান্তিক ঘটনা ঘিরে কেউ কেউ দুই বাহিনীর মধ্যে উসকানি দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জনগণ এসব বিষয়ে সচেতন রয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে ইস্যু করে সরকার হটানোর মত দিবাস্বপ্ন দেখছে কেউ কেউ।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের শিকড় এ দেশের মাটির অনেক গভীরে। গুজব রটিয়ে, অপপ্রচার চালিয়ে কোনো লাভ হবে না। আপনারা দেখেছেন, এ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এরই মধ্যে আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে এরই মধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গুজব ও অপপ্রচার বন্ধে দেশ-বিদেশে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি গুজব রটনা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে দেশ-বিদেশে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করছি। শেখ হাসিনা সরকার কারো হাতে ইস্যু তুলে দেবে না। তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করা হয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি পালনে অনেকের শৈথিল্য আচরণ চলমান পরিস্থিতিকে যেকোনো সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন ইতালিকে ছাড়িয়ে সংক্রমণে ১৫তম অবস্থানে। দেশে কয়েক সপ্তাহ একটি নির্দিষ্ট ট্রেন্ডে অবস্থান করলেও এ সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হারও বেশি দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, অন্যদিকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে শৈথিল্য দেখা যাচ্ছে। আবার অনেকের লক্ষণ দেখা গেলেও নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। পরীক্ষার প্রতি অবহেলা স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে শৈথিল্য আমাদের চলমান পরিস্থিতিকে যেকোনো সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
মানুষের মাঝে মাস্ক পরিধানের গুরুত্ব তুলে ধরে অব্যাহত সচেতনতা আরো বাড়াতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আদালতে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের সময় টার্মিনাল ও পরিবহনে কেউ কেউ মানলেও অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা করেনি। জনস্বার্থ এবং বিচারপ্রার্থীদের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বিচারালয়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করতে আইন মন্ত্রণালয় এবং বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
ঈদযাত্রা স্বস্তির হয়েছে দাবি করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় ফেরিঘাটে সমস্যা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ছাড়া অন্য সব সড়কে ভ্রমণ স্বস্তিদায়ক ছিল। আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, জেলা প্রশাসন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সড়ক প্রকৌশলীদের ধন্যবাদ জানাই। ফিরতি যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন মেনে সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর জন্য পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অনুরোধ করছি। পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিশেষ করে হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধির আহ্বান জানাচ্ছি।
