কভিড ১৯

পাঁচ মাসে আড়াই লাখ ছাড়াল শনাক্তের সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে কভিড-১৯ সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় মার্চ। হিসেবে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাঁচ মাস পূর্ণ হলো আজ। গতকালই দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল আরো হাজার ৮৫১ জন কভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। নিয়ে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে লাখ ৫২ হাজার ৫০২।

শনাক্ত রোগীর সংখ্যা একশ ছাড়ায় এপ্রিল। এরপর ১৪ এপ্রিল তা এক হাজার ছাড়িয়ে যায়। শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করে মে। এরপর এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে তা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। জুলাই অর্ধলাখ শনাক্ত হওয়ার ১৭ দিনের মাথায় তা এক লাখ অতিক্রম করে।

মূলত এর পরের সময়টাতে বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেক বেশি ছিল। এখন যা কিছুটা হলেও কমে এসেছে। এক লাখ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর মাত্র বারো দিনের ব্যবধানে জুলাই সংখ্যাটি দেড় লাখ অতিক্রম করে। তবে দেড় থেকে দুই লাখে পৌঁছতে সময় লাগে মাত্র ১৬ দিন। ১৭ জুলাই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ায়।

সেই হিসেবে জুনের ১৮ তারিখ থেকে জুলাইয়ের ১৭ তারিখ, এক মাসের কম সময়ের মধ্যে লক্ষাধিক লোক কভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এরপর সর্বশেষ সংখ্যাটি এখন আড়াই লাখ ছাড়াল। পরিসংখ্যান বলছে, সবশেষ এক লাখ রোগী শনাক্ত হতে সময় লেগেছে এক মাস সাতদিন। যেখানে মাঝে এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে একবার লক্ষাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছিল।

এদিকে সবশেষ দিনে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭ জন। নিয়ে করোনায় পর্যন্ত হাজার ৩৩৩ জন মারা গেছেন। আর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৪ জন। গতকাল বেলা আড়াইটায় কভিড-১৯ সম্পর্কিত নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, বর্তমানে ৮৪টি পরীক্ষাগারে কভিড-১৯-এর পরীক্ষা হচ্ছে। সবশেষ দিনে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৩ হাজার ২৫৩টি, নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৯টি। এবং এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৮২৩টি। এবং নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

গতকাল মৃত্যুবরণকারী ২৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২৪ জন এবং নারী তিনজন। হাসপাতালে মারা গেছেন ২৬ জন, বাড়িতে একজন। এখন পর্যন্ত পুরুষ মোট মারা গেছেন হাজার ৬৩০ জন, যা ৭৮ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং নারী মারা গেছেন ৭০৩ জন, যা ২১ দশমিক শূন্য শতাংশ। পুরুষ শনাক্তের হার ৭১ শতাংশ এবং নারীর ক্ষেত্রে শনাক্তের হার ২৯ শতাংশ।

মৃতদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, খুলনা পাঁচজন, চট্টগ্রাম রাজশাহী বিভাগে তিনজন করে, রংপুর বিভাগে দুজন এবং বরিশাল বিভাগের একজন রয়েছেন। নিয়ে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে হাজার ৫৯৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৯৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০৫ জন, খুলনা বিভাগে ২৪৭ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, সিলেট বিভাগে ১৫৬ জন, রংপুর বিভাগে ১৩২ জন ময়মনসিংহ বিভাগে ৭১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) জানান, সবশেষ দিনে আরো ৮১৫ জন আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন। এবং আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৮৩৮ জন। পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে গেছেন ৫৫ হাজার ১৭৫ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৫২৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৫১ জন।

তিনি জানান, সবশেষ দিনে কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন হাজার ৬০ জন, ছাড়া পেয়েছেন হাজার ২৮১ জন। পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন লাখ ৪৮ হাজার ১৩৮ জন, পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন লাখ ৯৫ হাজার ৫২৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৬০৯ জন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয় বছরের মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে। বৈশ্বিক সংক্রমণের তালিকায় বাংলাদেশের এখনকার অবস্থান ১৫তম। এরই মধ্যে দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে চলতি মাসের শেষ অব্দি স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোরতার কথা বলা হয়েছে। তবে এর মধ্যেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন