পাইরেটেড টিভি শো এখন ১০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য!

বণিক বার্তা ডেস্ক

মনে হবে আসল ক্যাবল গ্রাহক, পরিচিত টিভি শো, বিজ্ঞাপন এবং এমনকি কাস্টমার-সার্ভিস লাইনও। কিন্তু পাইরেটেড ইন্টারনেট-প্রোটোকল টেলিভিশন সার্ভিস নামে পরিচিত এই পণ্য আসলে অবৈধ। 

অ্যান্টি-পাইরেসি কনসাল্টিং ফার্ম কুদেলস্কি গ্রুপের অলাভজনক ইউনিট ডিজিটাল সিটিজেনস অ্যালায়েন্স অ্যান্ড নাগরার এক প্রতিবেদন বলছে, গত বছর লাইভ টিভি ফিড চুরি করে ও তা পুনরায় অনলাইনে বিক্রি করে ১০০ কোটি  ডলার আয় করেছে স্ক্যামাররা! 

এর মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারীতে এই চুরির ঘটনা বেড়েছে, কেননা ঘরবন্দি আমেরিকানরা অভ্যন্তরীণভাবেই বিনোদনের উপায় খুঁজে নিতে মরিয়া। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বিনোদন শিল্প এখনো পাইরেসি ঠেকাতে করতে হিমশিম খাচ্ছে, যা কিনা এ খাতকে বিরাট রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনের ফাঁকফোকরের কারণেই সমস্যা খারাপ পর্যায়ে চলে গেছে: টিভি অনুষ্ঠান পুনরায় বিক্রির কাজটি যুক্তরাষ্ট্রে অপরাধ হিসেবে গণ্য হলেও এ কাজে শাস্তি কমই হয়। ফলে বিভিন্ন গ্রুপের হাতে বারবার এই কর্মযজ্ঞ চলতে থাকে। 

একদল স্ক্যামারের সমন্বয়ে গঠিত পাইরেটেড-আইপিটিভি (ইন্টারনেট প্রোটোকল টেলিভিশন) ইন্ডাস্ট্রি, যারা কনটেন্ট চুরি করে পরে তা বিক্রি করে। তারা এসব সরাসরি কিংবা কোনো ছোটখাট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতে পারে। ফলে এটিকে বৈধ ক্যাবল টেলিভিশন সেবাদাতা বলেই মনে হবে। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার সার্ভিস প্রভাইডার রয়েছে যারা মাসে ১০ ডলারের বিনিময়ে গ্রাহককে পাইরেটেড কনটেন্ট সরবরাহ করে। কখনো কখনো তারা চুরি করা কনটেন্ট দিয়ে লোড করা ডিভাইসও গ্রাহককে অফার করে।

এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চুরি করা প্রডাক্টের এই সেবার বিজ্ঞাপনও প্রচারিত হয় এবং তারা ক্রেডিট কার্ডেও বিল নেয়। 

পাইরেটেড টিভি সিরিজের ক্রেতারা কদাচিৎ শাস্তির মুখোমুখি হন। কিন্তু এর ব্যবহারকারীরা ঠিকই ঝুঁকিতে থাকেন। কারণ বিক্রেতারা ব্যবহারকারীর ডিভাইসে নিষিদ্ধ সফটওয়্যার ইনস্টল করে দেয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ চ্যানেলও সংযুক্ত করে দেয় তারা। এর মধ্যে একটি হলে পারে সন্ত্রাসীদের প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক। 

বিনোদন ব্যবসায় পাইরেসি নতুন কিছু নয়, কিন্তু এটি ক্রমেই বাজে পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। গবেষণায় বলা হয়, আইপিটিভি সার্ভিসে এখনো পাইরেসি বিরোধী নীতি বাস্তবায়ন করা হয়নি। এমনকি অপরাধীরা এক বছর জেল খেটেছেন এমন নজিরও নেই। বরং এখন মানুষ বেশি বেশি ঘরে থাকার কারণে এর চাহিদাও বাড়ছে। 

সূত্র: ব্লমবার্গ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন