সাড়ে ২২ লাখ টন চাল রফতানি মিয়ানমারের

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা মহামারীর মধ্যেও মিয়ানমারের চাল রফতানি খাতে প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় লাখ টনের বেশি বেড়ে ২২ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে। মিয়ানমার রাইস ফেডারেশনের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে তথ্য জানানো হয়েছে। খবর সিনহুয়া এগ্রিমানি। 

মিয়ানমারে অক্টোবর থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হয়। চলে পরবর্তী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। দেশটির রাইস ফেডারেশনের বিবৃতি অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত (প্রায় ১০ মাস) মিয়ানমার থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২২ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে মোট ১৮ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে করোনা মহামারীর মধ্যেও এক বছরের ব্যবধানে মিয়ানমার থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অতিরিক্ত সাড়ে চার লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে।

গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময়ে মিয়ানমার থেকে রফতানি হওয়া চালের মধ্যে লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৬ টন ভাঙা চাল। বাকি ১৪ লাখ টনের কিছু বেশি সাধারণ সিদ্ধ চাল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে সাকল্যে লাখ ৫৫ হাজার ৮৭৪ টন ভাঙা চাল রফতানি হয়েছিল। অর্থাৎ, সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে মিয়ানমারের ভাঙা চালের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত চাল রফতানি করে দেশটি সব মিলিয়ে ৬৭ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার ডলার আয় করেছে।

স্থল সীমান্তের তুলনায় সমুদ্রপথে মিয়ানমার থেকে চাল রফতানি বেশি গতিশীল ছিল। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত দেশটি থেকে রফতানি হওয়া চালের ৮৫ দশমিক ১২ শতাংশ সমুদ্রপথে রফতানি গন্তব্যে গেছে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির রাইস ফেডারেশন। বাকি ১৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ চাল স্থল সীমান্ত পথে চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলোয় রফতানি করেছে মিয়ানমারের রফতানিকারকরা।

সময় মিয়ানমার থেকে রফতানি হওয়া চালের সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল আফ্রিকার দেশগুলোয়। মোট রফতানির ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ চাল দেশটি থেকে আফ্রিকায় গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৭ জুলাই পর্যন্ত মিয়ানমারের চালের রফতানি বাজারের ২৭ শতাংশ হিস্যা চীনের দখলে ছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর দখলে ছিল ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বাজার হিস্যা।

মিয়ানমার রাইস ফেডারেশনের উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্ট লুইন বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মিয়ানমার থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২৪ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনা মহামারীর মধ্যেও প্রায় ১০ মাসে সাড়ে ২২ লাখ টন চাল রফতানি করা হয়েছে। বাকি দুই মাসে আরো দেড় লাখ টন চাল রফতানি করতে হবে। আশা করা হচ্ছে, অর্থবছর শেষে চাল রফতানির লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে। এর পেছনে চীন আফ্রিকার দেশগুলোয় বাড়তি চাহিদা প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

চাল উৎপাদনকারী রফতানিকারক দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় মিয়ানমারের অবস্থান সপ্তম। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর মিয়ানমার থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২২ লাখ টন চাল রফতানি করা হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ কম। চলতি বছরও দেশটি থেকে একই পরিমাণ চাল রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে মিয়ানমারের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চাল রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। ওই বছর দেশটি থেকে আগের বছরের তুলনায় বেড়ে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন