করোনা সংকটেও বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যেও বিনিয়োগ সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসে একটা ধাক্কা এসেছে এটা ঠিক। আবার সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কাজেই কারা বিনিয়োগ করতে চায় সেদিকে লক্ষ রেখে, সেই বিনিয়োগ যাতে আমাদের দেশে আসে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

গতকাল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) গভর্নিং বোর্ডের সভায় সভাপতিত্বকালে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় অংশ নেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আরো বেশি ইনভেস্টমেন্ট আনতে হবে, এর সুযোগ আছে। অনেক দেশে এখন ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ। আমাদের জনসংখ্যা আছে, জমি তৈরি আছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা আছে। সুযোগটায় আমরা কিন্তু ইনভেস্টমেন্ট আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে পারি এবং আনতে পারি; আমাদের সেই সুযোগটা রয়েছে। সেই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে বিনিয়োগের পরিবেশ আমাদের রয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে সব দেশেই সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যার মধ্য দিয়েই কীভাবে আমাদের দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাবে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। সেদিকে লক্ষ রেখে আমাদের কাজ করতে হবে এবং আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশটাকে আকর্ষণীয় করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেহেতু জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত এমডিজি খুব দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছি। এখন আমরা যাব এসডিজিতে, এটাও অর্জনের জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এরই মধ্যে আমরা কতগুলো বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। এর মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন অন্যতম। অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হলে কখনই বিনিয়োগ আসতে পারে না। রাস্তাঘাট, নৌপথ, রেলপথ, আকাশপথসহ সবগুলো যাতে উন্নত হয়, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুতের সমস্যা ছিল তীব্র। কিন্তু সেটা এখন উদ্বৃত্ত আছে। গ্যাসের সমস্যাটা আমরা নিজেদের গ্যাস যেগুলো আছে তা উত্তোলনের ব্যবস্থা এবং এলএনজি আমদানি করছি। তাই সেই সমস্যাও সমাধান করে নিয়েছি। তাছাড়া বিনিয়োগের জন্য যেসব প্রকল্পগুলো নিয়েছিলাম, তার ফলাফল এরই মধ্যে মানুষ পেতে শুরু করেছে। বিনিয়োগ বিকাশে আমরা কর প্রদান সুবিধা, অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি সমগ্র বাংলাদেশে। উন্নয়নটা শুধু একটা জায়গায় না সমগ্র দেশব্যাপী যাতে হয় সেই ব্যবস্থাটা আমরা করে যাচ্ছি। সেখানে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ খুব সহজে হতে পারবে। এবং শ্রমিকও খুব সহজে পাবে। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছি। প্রতিটি উপজেলায় প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করতে কর রেয়াত দেয়া হচ্ছে। মূলধনি যন্ত্র আমদানিতে সুদ মওকুফসহ সব পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। আমাদের কিছু পদক্ষেপে বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে। যেটা ২০১৬-১৭ বছরে যৌথ ১০০ ভাগ বিদেশী বিনিয়োগ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার ছিল, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়েছিল দশমিক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বিনিয়োগের সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। সীমিতভাবে হলেও আমাদের কাজ করতে হবে। ২০০৮ সালে ঘোষণা দিয়েছিলাম, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব। দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষাসহ সব কিছু সহজ করার জন্য সেটা করা, সেটা একটা বিনিয়োগই আমি বলব। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছিলাম বলেই আজকে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সভাটা করতে পারছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জিডিপি দশমিক অর্জন করেছিলাম। এবার দশমিক অর্জন করার জন্য দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এমন একটি পরিস্থিতিতে আটকা পড়েছি। যাতে সারা বিশ্বই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সভায় গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব . আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন