পুঁজিবাজারে লেনদেন খরা কাটছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন ঠেকাতে এ বছরের ১৯ মার্চ শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বেধে দিয়ে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর থেকেই লেনদেন খরার মধ্যে পড়ে যায় পুঁজিবাজার। অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই পুঁজিবাজারের সূচক ও লেনদেনে চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে। গত ৫ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। এতে করোনা পরিস্থিতিতেও কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে। আর লেনদেনে গতি ফেরার কারণে সামনের সপ্তাহের রোববার থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেনের সময়সূচি আরো ৩০ মিনিট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। রোববার থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সকাল ১০ থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সাড়ে ৪ ঘণ্টা লেনদেন চলবে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল ৪ হাজার ৩০৭ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে ১ হাজার ১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল ৯৯৭ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ২৩ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল ১ হাজার ৪৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪৫২ পয়েন্টে। 

গতকাল ডিএসইতে মোট ৮৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৭১৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২১৯টির, কমেছে ৭৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৫টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ২০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে সাধারণ বীমা খাত। ১৯ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ খাত। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ দখলে নিয়েছে প্রকৌশল ও বস্ত্র খাত। টেলিযোগাযোগ খাতের দখলে ছিল ৭ শতাংশ।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, ভিএফএস থ্রেড, গ্রামীণফোন, গোল্ডেন হার্ভেষ্ট অ্যাগ্রো, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল, প্রগতি লাইফ ইন্সুরেন্স, পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স,  বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, আরএসআরএম স্টীল, আমান কটন ফাইব্রাস, নিটল ইন্সুরেন্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো, জিকিউ বলপেন ও প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দর পতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে, অগ্রনী ইন্সুরেন্স, ঢাকা ইন্সুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্স, প্রভাতী ইন্সুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্সুরেন্স, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্স, ফার্স্ট ফিন্যান্স, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্সুরেন্স ও বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ১০২ পয়েন্ট বেড়ে ৭ হাজার ৫১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ৭ হাজার ৪১১ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৬৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ৫০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ৪৯ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন