পত্রিকার অনলাইন সংস্করণগুলোর তালিকা একযোগে প্রকাশ করা হবে —নিবন্ধনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণগুলোর তালিকা পরে একযোগে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী . হাছান মাহমুদ। গতকাল সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী মতবিনিময় সভায় বঙ্গবন্ধুর প্রথম ছেলে শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলাপকালে এমনটি জানান তিনি।

নিবন্ধনের জন্য ৩৪টি অনলাইন নিউজপোর্টালের প্রকাশিত তালিকার পর আরো তালিকা আসবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনলাইন নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সরকারের সিদ্ধান্তে যে প্রক্রিয়াটি আমরা অনুসরণ করছি তা হলো, যতগুলো অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধনের জন্য দরখাস্ত করেছে, সবগুলোর তালিকাই তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সম্মিলিতভাবে তদন্ত সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আমরা যতগুলোর ব্যাপারে অনাপত্তি পেয়েছি, তার মধ্যে দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ ছাড়া সব অনলাইন নিউজপোর্টালের তালিকা আমরা প্রকাশ করেছি।

বিষয়ে উদ্বেগের কারণ নেই জানিয়ে . হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে অনেক প্রতিষ্ঠিত এবং ভালো অনলাইনের নাম প্রকাশিত তালিকায় আপনারা পাননি, দেখেননি। আমরা তদন্ত সংস্থাগুলোকে বারবার তাগাদা দিয়েছি এবং দিচ্ছি, যাতে তারা দ্রুত প্রতিবেদন দেয়। কেউ যাতে নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়, সেজন্য ৩৪টির নাম প্রকাশ করার সঙ্গে একটি বিজ্ঞপ্তিও আমরা প্রকাশ করেছিলাম। যাদের ব্যাপারেই তদন্ত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ইতিবাচক রিপোর্ট আসবে, সবাই নিবন্ধনের সুযোগ পাবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তবে যে অনলাইনগুলো যে উদ্দেশ্যে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন, সেই উদ্দেশ্যে পরিচালিত না হয়ে ভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয় অথবা নিয়মনীতি কিংবা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে যে নিয়মগুলো মানা প্রয়োজন সেগুলো না মানে, সেগুলোর ব্যাপারে তো অবশ্যই তদন্ত সংস্থার রিপোর্ট সে রকম আসবে, সে রকম সিদ্ধান্ত হবে।

অনৈতিক কাজের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডারকে জরিমানা ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্লাটফর্মের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এগুলো কীভাবে আমাদের দেশে পরিচালিত হওয়া প্রয়োজন এবং কীভাবে তারা করের আওতায় আসবে এবং আমাদের দেশের আইন, নিয়ম-কানুন, সংস্কৃতি যাতে মেনে চলে, সেজন্য কী করা প্রয়োজন, সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করে দিয়েছি।

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সেই কমিটিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিরা এবং একজন আইনজ্ঞ রয়েছেন। তারা যে আমাদের দেশ থেকে ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে নিয়ে যাচ্ছে, এজন্য তারা আয়কর দিচ্ছে না। এটা অবশ্যই দেয়া প্রয়োজন। অন্যান্য দেশে ব্যবস্থা রয়েছে, যেমন অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রী বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বার্থেই এগুলোকে করের আওতায় আনা প্রয়োজন।

মন্ত্রী বলেন, এছাড়া ধরনের সার্ভিস প্রোভাইডার, অর্থাৎ ফেসবুক, টুইটার অথবা ইউটিউব বা অন্যান্য যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আছে সেগুলো ব্যবহার করে সমাজে অস্থিরতা তৈরি, ফেক নিউজ করা, কারো চরিত্র হনন করা, কাজগুলো যে করা হচ্ছে, সেজন্য সার্ভিস প্রোভাইডারকে জরিমানা করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন বিধান রয়েছে। আমাদের দেশেও প্রচলিত আইনে আমরা জরিমানা করতে পারি। আমরা প্রয়োজনে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করব। আমরা আলাপ-আলোচনা করছি, এজন্য যদি নতুন আইনের প্রয়োজন হয়, নতুন আইনও করা হবে।

শহীদ শেখ কামালের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রথম ছেলে এবং দ্বিতীয় সন্তান শহীদ শেখ কামালের জন্মদিন একই সঙ্গে যেমন আনন্দের, তেমনই বেদনার স্মৃতিবাহী।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তখন পিতা বঙ্গবন্ধু, মাতা বঙ্গমাতা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনিও নির্মমভাবে শহীদ হন। বাংলাদেশে হত্যা-খুনের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ হোক, এটিই তার এই পবিত্র জন্মদিনে আমাদের প্রার্থনা।

শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশের এক অনন্য ক্রীড়া সংগঠক উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তন করেছিলেন। সংস্কৃতিমনা মানুষটি সেতার বাজাতেন, গান গাইতেন, ক্রিকেট খেলতেন। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে একজন ক্রীড়া সংগঠক, ক্রীড়াবিদ, সংস্কৃতিমনা প্রচণ্ড সম্ভাবনাময় একজন মানুষকে হারিয়েছে। তার জন্মদিনে আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি, মাগফিরাত কামনা করি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন