সংস্কৃতির রাজনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন শেখ কামাল —ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংস্কৃতির রাজনীতির ওপর শহীদ শেখ কামাল গুরুত্বারোপ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শেখ কামাল বুঝতে পেরেছিলেন, রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন চাইলে রাজনীতির সংস্কৃতি বদলাতে হয়। রাজনীতির সংস্কৃতিকে টেকসই করার জন্য শেখ কামাল সংস্কৃতির রাজনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন। ক্রীড়া সংস্কৃতিকে তিনি গ্রহণ করেছিলেন আত্মোপলব্ধির সোপান হিসেবে। গতকাল শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বনানী করবস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে সকাল ৯টায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নগর নেতাদের নিয়ে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মোনাজাত করেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ ছাড়াও দলের সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ক্রীড়া সংগঠনের নেতারা শহীদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের শেখ কামালের কর্মময় জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

সময় তিনি বলেন, দেশ বিভাগের মাধ্যমে সৃষ্ট সদ্য পাকিস্তান রাষ্ট্রে শেখ কামালের জন্ম হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রে শোষণ-বঞ্চনা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালির স্বাধীনতা আদায়ের সংগ্রামের পরিক্রমা আর শেখ কামালের বেড়ে ওঠা ছিল সমান্তরাল। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে তিনি খুব কাছ থেকেই বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামের বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন।

অভিজ্ঞতায়-স্মৃতিতে-অনুভূতিতে শেখ কামাল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চির অম্লান থাকবেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শহীদ শেখ কামাল খেলাধুলা সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আত্মনিবেদিত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাড়ি থেকে বের হয়ে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন তার প্রজন্মের অগ্রবর্তী পথপ্রদর্শক। তিনি ছিলেন দূরদর্শী গভীর চিন্তাবোধের অধিকারী।

শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের সন্তান হয়েও অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। ক্ষমতার বিন্দুতে থেকেও তিনি ছিলেন নির্লোভ, নির্মোহ। কারণে শেখ কামাল বর্তমান প্রজন্মের কাছে এক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হলেও স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি দেশবিরোধী চক্র জাতির পিতার পরিবার নিয়ে গোয়েবলসীয় কায়দায় বারবার মিথ্যাচার করে জনমানসে এক ভ্রান্ত প্রতিচিত্র আঁকার অপচেষ্টা করেছে। ঘন কালো মেঘ সূর্যোদয় ক্ষণিকের জন্য বাধাগ্রস্ত করতে পারলেও যেমন সূর্যোদয় রুখতে পারে না, ঠিক তেমনি সত্য তার নিজস্ব শক্তি নিয়েই সব বাধা ডিঙিয়ে উদ্ভাসিত হয় প্রকৃতির নিয়মে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ কামাল অফুরন্ত-অনিঃশেষ প্রাণশক্তির অধিকারী ছিলেন। বিরামহীনভাবে ছুটে চলা উদ্দীপ্ত কর্মনিষ্ঠ প্রাণের স্পন্দনকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেয় খুনি ঘাতক চক্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খুনি ঘাতক চক্র শেখ কামালকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুধু এক প্রতিশ্রুতিশীল তারুণ্য বা যুব অহংকারকেই হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের এক সম্ভাবনাময় নেতৃত্বকে। সেদিন বিদেশের মাটিতে থাকার কারণে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা শেখ রেহানা। এর পরও শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য অসংখ্যবার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু হতভাগ্য-বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় আমাদের সামগ্রিক মুক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় বেঁচে আছেন।

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর এসএসএফের সাবেক কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন করা হবে। কেউ পার পেয়ে যেতে পারবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন