৭ মাসে ৩৯ লাখ টন চাল রফতানি ভিয়েতনামের

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী শুরুর পর কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল ভিয়েতনামের চাল রফতানি খাত। খাদ্যপণ্যটির রফতানি সাময়িক বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিল দেশটি। তবে অল্প সময়ে মধ্যে ধাক্কা সামলে ওঠে ভিয়েতনাম। ফের চালু হয় চাল রফতানি। তবে জুলাইয়ে এসে মন্দার মুখে পড়েছে খাত। বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দেড় শতাংশ কমে এসেছে। ভিয়েতনামের জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে তথ্য জানানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চলতি বছর ভিয়েতনামের চাল রফতানির লক্ষ্য অর্জন নিয়ে খাতসংশ্লিষ্টদের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খবর রয়টার্স এগ্রিমানি।

চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় ভিয়েতনামের অবস্থান পঞ্চম। তবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যটির মূল্য নির্ধারণে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। ভিয়েতনামের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩৯ লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ কম।

তবে রফতানির পরিমাণ কমলেও চলতি বছরের জানুয়ারি-জুলাই সময়ে চাল রফতানি করে ভিয়েতনামিজ রফতানিকারকদের আয় ছিল বাড়তির দিকে। সময় চাল রফতানি বাবদ দেশটি সব মিলিয়ে ১৯১ কোটি ডলার আয় করেছে। এক বছরের ব্যবধানে চাল রফতানি বাবদ দেশটির আয় ১০ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি দামের কারণে রফতানি আগের তুলনায় কমলেও চাল রফতানি করে ভিয়েতনামিজ রফতানিকারকদের আয় বাড়তির দিকে রয়েছে বলে জানান খাতসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মাসভিত্তিক হিসাবে, সর্বশেষ জুলাইয়ে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে তিন লাখ টন চাল রফতানি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিস। সময় চাল রফতানি করে দেশটির সম্মিলিত আয় দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলারে।

বছরের শুরুর দিকে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে ভিয়েতনামে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে দেশটি করোনা জয়ে বিশ্ববাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়। ওই সময় সংক্রমণ সীমিত পর্যায়ে আটকে রাখতে সফল হয়েছিল ভিয়েতনাম। তবে মহামারীর কারণে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষা জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। সহজে স্বল্পমূল্যে জনগণের হাতের কাছে চাল পৌঁছে দিতে রাজধানী হ্যানয়সহ বিভিন্ন বড় শহরে চালের এটিএম বুথ চালু করা হয়।

বিষয়ে ভিয়েতনামের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মাই থিয়েন দায়াং বলেন, মহামারীর কারণে মার্চে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানি বন্ধ ছিল। এপ্রিলে খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টনের সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল। মূলত অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষা জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাময়িকভাবে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এর সুফলও মিলেছে।

তিনি আরো বলেন, গত মে মাস থেকে চাল রফতানি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পর রফতানিও বাড়ানো হয়েছে। তবে তা আগের বছরের একই সময়ের পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে চলতি বছর সব মিলিয়ে ৭০ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করছে ভিয়েতনাম সরকার, যা আগের বছরের তুলনায় চার-পাঁচ লাখ টন বেশি। তবে খাদ্যপণ্যটির রফতানির বর্তমান চিত্র দেখে লক্ষ্য পূরণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বছরের প্রথম সাত মাসে ৩৯ লাখ টন চাল রফতানি করা সম্ভব হয়েছে। বাকি রয়েছে আরো পাঁচ মাস। সময়ের মধ্যে ৩১ লাখ টন চাল রফতানি নাও হতে পারে। মূলত করোনা মহামারীতে এক মাসের বেশি সময় চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ না থাকলে বছর শেষে রফতানির লক্ষ্য পূরণ সম্ভব ছিল বলে অভিমত তাদের।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন