লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজন বাংলাদেশী নিহতের তথ্য জানা গেছে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২১ সদস্য এবং ৭৮ জন প্রবাসী বাংলাদেশী আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলের ২০০ গজের মধ্যে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ বিএনএস বিজয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস ও আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় লেবাননে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বিকাল আনুমানিক ৬টায় লেবানন সমুদ্রবন্দরে অতি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়। এ বিস্ফোরণে জানমাল ও স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এ পর্যন্ত ১০০ জনের মতো লোক মারা গিয়েছে। আর চার হাজারের অধিক লোক আহত হয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘লেবাননে এ পরিস্থিতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব সময়ে হালনাগাদ তথ্য নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, যাতে আমাদের বাংলাদেশী কমিউনিটি এখানে ভালো থাকে। তাদের যেন সুচিকিৎসা প্রদান এবং বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে কোনো চিকিৎসা বা খাদ্যসহায়তা পাঠানো যায় কিনা।’
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘লেবাননে বর্তমান পরিস্থিতি বেশ থমথমে। সবাই বেশ আতঙ্কগ্রস্ত। বাংলাদেশী কমিউনিটি যারা আছেন, তারাও আতঙ্কগ্রস্ত। আমরা ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে তাদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। যাতে আমরা এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারি। লেবানন তিনদিন জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ দূতাবাসও তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছে।’
এদিকে আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লেবাননের রাজধানী বৈরুত বন্দরের একটি ওয়্যারহাউজে ভয়াবহ বিস্ফোরণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মেরিটাইম টাস্কফোর্সের অধীনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ বিজয়-এর ২১ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুত মেডিকেল সেন্টারে (এইউবিএমসি) ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের ইউনিফিলের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্সযোগে হামুদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তারা আশঙ্কামুক্ত। শান্তিরক্ষা মিশন ইউনিফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আহত নৌসদস্যদের চিকিৎসা চলমান রয়েছে।