মালয়েশিয়ায় মাত্র তিন খাতে কাজের সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবাসী কর্মীদের জন্য মাত্র তিন খাতে কাজের সুযোগ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশটিতে সংকুচিত হয়ে আসবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের পর বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়ার অর্থনীতিও মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। ফলে স্থানীয় কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে প্রবাসী কর্মী কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া সরকার বিদেশী শ্রমিকদের কাজের জন্য মাত্র তিনটি খাত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জানা গিয়েছে, মালয়েশিয়া সরকারের নতুন গাইডলাইন অনুযায়ী এখন থেকে শুধু নির্মাণ, কৃষিকাজ বৃক্ষায়ন বা বাগানের কাজে বিদেশী শ্রমিকদের নিয়োগ দেয়া হবে। বাকি খাতগুলোয় কাজ করবে শুধু মালয়েশীয়রাই। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ বিষয়ক উপমন্ত্রী আওয়াঙ্গ সোলাহুদিন সম্প্রতি দেশটির পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকায়েতে তথ্য দেন।

পার্লামেন্টে আওয়াঙ্গ সোলাহুদিন বলেন, শুধু নির্মাণ, কৃষি প্লান্টেশন খাতে বিদেশী শ্রমিকদের নিয়োগ করা যাবে। অন্য যেসব খাত রয়েছে, তা স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে পূরণ করতে হবে। বিদেশী শ্রমিক কমিয়ে আনার গাইডলাইন অনুসরণের মাধ্যমে এটা করা হবে।

প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন, যাদের বড় অংশই শ্রমিক। উৎপাদন সেবা খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত রয়েছেন তারা। অনেকেই আবার ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত। চলমান মহামারী পরিস্থিতি বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশীদের চাকরি ব্যবসা নিয়ে মারাত্মক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে।

মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে এমনিতেই দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন তারা। সবচেয়ে বেশি সংকটে রয়েছেন সেখানে অবৈধভাবে অবস্থানরতরা। নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আরো অনেক প্রবাসী কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়বেন। কারণ অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মী বিভিন্ন হোটেল, রেস্টুরেন্ট মার্কেটে কাজ করছেন। সম্প্রতি এসব প্রতিষ্ঠানে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক অভিযান ধরপাকড়ের কারণে এমনিতেই বিপাকে পড়ে যান তারা। গ্রেফতার আতঙ্কে তাদের অনেকেই আত্মগোপন করেছেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। কর্মহীন দিন কাটাচ্ছেন আর্থিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে। মহামারীজনিত দুর্ভোগ তাদের বিপদ বাড়িয়েছে শুধু।

প্রসঙ্গে জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বণিক বার্তাকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে সব দেশেই প্রবাসী কর্মীরা চাপে রয়েছেন। আবার নতুন করে যে কর্মী কবে পাঠানো শুরু হবে, সেটাই এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের জন্যও এটি প্রযোজ্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে টিকে থাকতে হলে দক্ষ শ্রমিক রফতানিতে জোর দিতে হবে। সামনের দিনগুলোয় বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য কৃষি খাতে প্রচুর শ্রমিক প্রয়োজন হবে। আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন