জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিটের আইপিও বাতিল করেছে বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেডিকেল ডিভাইস উৎপাদনকারী জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের বুক বিল্ডিং পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল কোম্পানিটির আইপিও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। অবচয় কম ধার্য করা, সম্পদ মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো, নিজ গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে বড় অংকের ব্যবসায়িক লেনদেনের পাশাপাশি কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডার ইস্যু ব্যবস্থাপক হিসেবে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের স্বার্থগত দ্বন্দ্বের বিষয়টি বিবেচনা করে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট আইপিও প্রসপেক্টাসে অবচয় কম ধার্য করে বেশি মুনাফা দেখিয়েছে। রিসিভেবল বা পাওনা বেশি দেখিয়ে বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছে দেখানো হয়েছে। কোম্পানিটির ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের কাছে। অথচ একই সঙ্গে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট আইপিও প্রক্রিয়ায় জেএমআই হসপিটালের ইস্যু ব্যবস্থাপক হিসেবে যৌথভাবে জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের সঙ্গে কাজ করছে। পাবলিক ইস্যু রুলস অনুসারে ইস্যুয়ার কোম্পানির সঙ্গে ইস্যু ব্যবস্থাপকের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারবে না। কোম্পানিটির আন্তঃ গ্রুপ পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বড় ধরনের লেনদেন রয়েছে। কোম্পানিটির মোট বিক্রির ৪৪ শতাংশই আসে স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। ১০৯ কোটি টাকা আন্তঃ কোম্পানি ঋণ নিয়েছে জেএমআই হসপিটাল। ফলে আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটির ৭৫ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না কমিশন। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গতকাল বিএসইসির পক্ষ থেকে কোম্পানিটির এমডি বরাবর চিঠি পাঠিয়ে আইপিও আবেদন বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

গত বছরের ২০ অক্টোবর বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহে রোড শোর আয়োজন করেছিল জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং। সংগৃহীত অর্থের মধ্যে কোটি ৮৭ লাখ টাকা ভূমি উন্নয়ন, ভবন পূর্ত কার্যক্রমে কোটি, বিএমআরই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় প্লান্ট যন্ত্রপাতি বাবদ ২৬ কোটি ৩৯ লাখ, কমন ফ্যাসিলিটিজ বাবদ কোটি ৬১ লাখ, ব্যাংকঋণ পরিশোধ বাবদ ২৫ কোটি এবং আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ বাবদ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা ছিল কোম্পানিটির। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি আর পরিশোধিত মূলধন ৯০ কোটি টাকা। ২০০৮ সালে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে জেএমআই হসপিটাল রিকুইটিজট ম্যানুফ্যাকচারিং ইনকরপোরেটেড হয়। ২০১০ সালে ট্রেডিং ২০১৩ সালে প্রডাকশন ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি প্রাইভেট থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি ছিল ১৩০ কোটি টাকা। সময়ে কোম্পানিটির ১৮ কোটি টাকা কর-পরবর্তী মুনাফা হয়। ৩০ জুন ২০১৯ পর্যন্ত কোম্পানিটির মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪৭৮ কোটি টাকা। কোম্পানিটির রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যু হিসেবে কাজ করছে সিটিজেন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। নিরীক্ষক পিনাকী অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস। আর ভ্যালুয়ার ছিল মালেক সিদ্দিকী ওয়ালি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন