বিশ্ববৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতার আসনে হুয়াওয়ে

বণিক বার্তা ডেস্ক

বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে একচ্ছত্র আধিপত্য করে আসছে স্যামসাং। এতদিন নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও বিশ্বের বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতার তকমাটি দখলে রাখতে সক্ষম হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। তবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) স্যামসাংয়ের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রথমবার ভিন্ন চিত্র উঠে এসেছে। এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে প্রতিদ্বন্দ্বী স্যামসাংকে হটিয়ে বিশ্বের বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতার আসন দখলে নিয়েছে চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে। কভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন বিক্রিতে ভাটা পড়লেও চীনের বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি হুয়াওয়ের সাফল্যে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বিশ্বজুড়ে হুয়াওয়ের স্মার্টফোন সরবরাহ কোটি ৫৮ লাখ ইউনিটে পৌঁছেছে। অন্যদিকে স্যামসাং ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন সরবরাহ লাখ ৩৭ লাখ ইউনিটে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী হুয়াওয়ে। যুক্তরাষ্ট্র নানা অজুহাতে প্রতিষ্ঠানটির নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ডিভাইস ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। নেটওয়ার্ক সরঞ্জামে গুরুতর নিরাপত্তা দুর্বলতা থাকার অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তা- নয়; হুয়াওয়ে মার্কিন নাগরিকদের তথ্য চীন সরকারের কাছে হস্তান্তর করছে এমন অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটিকে যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে জটিলতায় পড়েছে হুয়াওয়ে। নিজেদের নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম এবং ডিভাইস উন্নয়নে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার ক্রয় করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিকূল এমন পরিস্থিতির মধ্যেও স্মার্টফোন সরবরাহে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্যামসাংকে হটিয়ে শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসাকে হুয়াওয়ের ভবিষ্যৎ ডিভাইস ব্যবসা বিভাগের জন্য ইতিবাচক মনে করা হচ্ছে।

ক্যানালিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে হুয়াওয়ের দুই-তৃতীয়াংশ স্মার্টফোন চীনের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। চীনের উহান শহর নভেল করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল হলেও তা খুব দ্রুত দেশটির আরো কয়েকটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর অবস্থানের অংশ হিসেবে দেশজুড়ে অনেক রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছিল চীন সরকার। বাধ্য হয়ে হুয়াওয়েসহ চীনভিত্তিক ডিভাইস ব্র্যান্ডগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হয়। কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আউটলেট বন্ধসহ উৎপাদন সীমিত করতে বাধ্য হয় হুয়াওয়ে। তবে নভেল করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল হলেও খুব দ্রুতই তা মোকাবেলায় সক্ষম হয় চীন। চীন যখন স্বাভাবিক হতে শুরু করে, তখন ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ।

বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়লে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন ব্যবসা বিভাগের কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। চীনে প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস উৎপাদন কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এছাড়া চীনের বাজারে স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে স্যামসাং। বিশ্বের বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারটিতে এখন স্যামসাংয়ের দখল শতাংশের কমে দাঁড়িয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে প্রভাবিত হয় ভিয়েতনামে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন উৎপাদন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন