সপ্তম বোলার হিসেবে ব্রডের ৫০০ টেস্ট উইকেট

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ও ইতিহাসের সপ্তম বোলার হিসেবে টেস্টে ৫০০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়লেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তার এ অর্জনের দিন ম্যানচেস্টারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৯ রানে হারিয়ে ২-১-এ সিরিজ জিতে নিয়েছে ইংল্যান্ড। ৩৯৯ রানের টার্গেটে নেমে ক্যারিবীয়রা অলআউট হয় ১২৯ রানে।  

ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটকে ফেরানোর মধ্য দিয়ে সতীর্থ জেমস অ্যান্ডারসনকে অনুসরণ করে পাঁচশর ক্লাবে নাম লেখান ৩৪ বছর বয়সী ব্রড। ৫০০ উইকেট নিলেন ১৪০তম টেস্টে। এর আগে শ্রীলংকার মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০), অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন (৭০৮) ও গেøন ম্যাকগ্রা (৫৬৩), ভারতের অনিল কুম্বলে (৬১৯) ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোর্টনি ওয়ালশ (৫১৯) পাঁচশর বেশি উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখান। চতুর্থ ফাস্ট বোলার হিসেবে বনেদি ক্লাবের সদস্য হলেন তিনি।  

আজ মঙ্গলবার শেষ টেস্টের পঞ্চম দিন জিততে ক্যারিবীয়দের ৮ উইকেট তুলে নেয়ার প্রয়োজন পড়ে ইংলিশদের। এদিন গর্জে ওঠেন প্রথম টেস্টে বাদ পড়া ব্রড। সেই থেকে সুযোগ পেয়ে দুই টেস্টে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। চলমান আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ১১ ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ৫৩ উইকেট শিকার করেছেন ব্রড, যেখানে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পর তিন নম্বরে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। 

ব্রডকে নিয়ে ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেন, ‘সে অসাধারণ। শুধু উইকেটের জন্যই নয়, তার খেলোয়াড়ী চেতনার জন্যও। সে ৫০০ উইকেট শিকার করেছে, হয়তো ৬০০-ও পাবে একদিন। সবচেয়ে বেশি (চার) অ্যাশেজ জয়ের সাথেও জড়িত সে।’ ২০০৭ সালে এই ভনই তাকে টেস্ট ক্যাপ পড়ার সুযোগ দিয়েছিলেন। 

ব্র্যাথওয়েটকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে পাঁচশর ক্লাবে নাম লেখান ব্রড। বলাবাহুল্য, ২০১৭ সালে এই ব্র্যাথওয়েটকে আউট করেই ক্যারিয়ারের ৫০০তম উইকেট পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। ৫৮৯ উইকেট নিয়ে টেস্টের সফলতম ফাস্ট বোলার জিমি সতীর্থ ব্রডকে নিয়ে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে পরিশ্রম করে নিজেকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে স্টুয়ার্ট। সে শুধু তরুণদের জন্যই নয়, আমার জন্যও অনুপ্রেরণার।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমার চেয়ে বেশি উইকেট নেয়ার ভালো সুযোগ রয়েছে তার। আমার মতো সেও কেন দীর্ঘ সময় খেলতে পারবে না? সে দারুণ ছন্দে আছে এবং পেস অ্যাটাকে নেতৃত্বও দেয় ভালো।’  

ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান ও আইসিসির ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রডের ছেলে স্টুয়ার্ট ব্রড। যদিও বাবার ছাঁয়ায় থাকতে হয়নি তাকে। টেস্ট ক্রিকেটে তার দুটি হ্যাটট্রিকও রয়েছে। ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে ও ২০১৪ সালে শ্রীলংকার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন এ ডানহাতি পেসার। যদিও তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিংটা করেছিলেন ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে। তখন ১৫ রানে ৮ উইকেট তুলে নিয়ে অসিদের মাত্র ৬০ রানে অলআউট করে দিয়েছিলেন ব্রড। ক্যারিয়ারে ১৭ বার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। 

আজ জয় শেষে ব্রড বললেন, ‘এটা অবিশ^াস্য অনুভুতির। যদিও এটা খুবই লজ্জার যে এ সময় আমার পরিবার ও বন্ধুবান্ধব কেই করতালি দিয়ে আমাকে অভিনন্দন জানাতে পারল না। অবশ্য বাবাকে পাওয়াটা দারুণ ছিল। ৫০০ উইকেট সত্যিই খুব বিশেষ অনুভুতির। ২০১৬ সালে যখন ওয়ানডে খেলা ছেড়ে দেই তখন খুব হতাশ হয়েছিলাম, কিন্তু ভেবে দেখলাম সেটাই আমাকে এখনো সতেজ রেখেছে। টেস্ট ক্রিকেট পরিশ্রমের খেলা, এ কারণেই আমরা এটাকে ভালোবাসি। এটা খুবই নেশার মতো এবং যখন আপনি জিতবেন তখন আপনাকে এটা পরিপূর্ণ আনন্দ দেবে।’  

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্রড ৩৬ রানে চারটি ও ক্রিস ওকস ৫০ রানে পাঁচটি উইকেট নেন। ম্যাচে ব্রডের শিকার ১০ উইকেট। প্রথম ইনিংসে নেন ৩১ রানে ছয় উইকেট। তিনিই ম্যাচ ও সিরিজসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন। যদিও সিরিজসেরা পুরস্কারটি তিনি ভাগাভাগি করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোস্টন চেজের সঙ্গে। 

সাউদাম্পটনে প্রথম টেস্ট জেতায় সিরিজ জয়েরও দারুণ সুযোগ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। যদিও ম্যানচেস্টারে টানা হেরে সেই সুযোগ হারাল জেসন হোল্ডারের দল। ইংল্যান্ডের এই দারুণ প্রত্যাবর্তনের নায়ক কি ব্রড?

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল্যান্ড: ৩৬৯ ও ২২৬/২ ডিক্লেয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯৭ ও ১২৯। ফল: ইংল্যান্ড ২৬৯ রানে জয়ী। সিরিজ: ইংল্যান্ড ২-১-এ জয়ী। 

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন