বন্যা-পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন কর্মসূচি কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকালে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বন্যা নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে করণীয় সম্পর্কে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। পুনর্বাসন কর্মসূচিগুলো যেন খুব ভালো হয়, খুব কার্যকর ও সময়ানুবর্তী হয়, সে বিষয়ে মন্ত্রিসভা বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী জোর দিতে বলেছেন।
চলতি মৌসুমে বন্যা শুরু হয়েছে গত ২৬ জুন। প্রথম ধাপে অন্তত ১০টি জেলায়, দ্বিতীয় ধাপে আরো আটটি জেলায় বিস্তার ঘটে বন্যার। ২৬ জুলাই পর্যন্ত সব মিলিয়ে দেশের ৩১ জেলার নিম্নাঞ্চল তিন ধাপে প্লাবিত হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে মাঠ পর্যায়ে আগে থেকেই একটা কাঠামো রয়েছে। তার পরও একটা এক্সট্রা ইফোর্ট দেয়া হচ্ছে, বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া আছে। কারণ আভাস আছে পানি নামতে দেরি হতে পারে, যদিও এখন পানি নেমে যাচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগরসহ বেশকিছু উপসাগর-সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে বলে কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বাভাস দিয়েছে। সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে পানি নামবে ধীরগতিতে। এজন্য আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছেন, বন্যার্তদের যা সাহায্য-সহযোগিতা দরকার তা করতে হবে। কভিডের এই সময় বন্যা হওয়ায় একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
বন্যায় আমন ধানের ক্ষতি হলেও জমিতে পলি পড়ার কারণে বন্যা-পরবর্তী সময়ের সুফল নিতে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, উঁচু এলাকায় আমনের ফলন ভালো হবে বলে ধারণা দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রোপা আমন চাষে গুরুত্ব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পুরো সুযোগটা যদি আমরা নিতে পারি তবে বোরোতে যে অতিরিক্ত উৎপাদন হয়েছে, তাতে আশা করা যাচ্ছে আমন ও রোপা আমন মিলে উৎপাদন ভালো হলে আমাদের জন্য তা বড় হাতিয়ার হবে।
গতকালের বৈঠকে বন্যাদুর্গত এলাকায় স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, বিশেষ করে গরু-বাছুরকে নিয়মিত ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম চালু রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কভিডের কারণে ত্রাণ সরবরাহের জন্য সরকারের প্রস্তুতি ছিল। সবকিছু ওপেন করে দেয়ায় ত্রাণের চাহিদা কমে গেছে। ভালো একটা রিলিফ আমাদের কাছে মজুদ আছে।