এপ্রিল-জুন

করোনার প্রভাবে সিঙ্গারের মুনাফা কমেছে ৮০%

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনা ভাইরাসের কারণে চলতি বছরের ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটিকালীন সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ফলে এ সময়ে কোন ব্যবসা করতে পারে নি ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। এতে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) কোম্পানিটির বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৪২ শতাংশ কমেছে। আর ব্যবসা কমার কারণে এ সময়ে কোম্পানিটির  কর পরবর্তী মুনাফা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে।

সিঙ্গার বাংলােেদশের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২৯৮ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে কোম্পানিটি। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৫১৭ কোটি টাকার পণ্য। ব্যবসা কমার কারণে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা, যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ৩৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৯ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ৯১ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি হয়েছে ৬০১ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ৭৮৯ কোটি টাকা। আর আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির করপরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ৫১ কোটি টাকা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৯১ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৫ টাকা ১৪ পয়সা। ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ২৪ পয়সায়।

ব্যবসা ও মুনাফা কমার পাশাপাশি করোনার কারণে সিঙ্গার বাংলাদেশের নগদ অর্থ প্রবাহ কমে গেছে। এ বছরের ৩০ জুন শেষে কোম্পানির পরিচালন কার্যক্রম থেকে নগদ অর্থ প্রবাহের পরিমাণ ছিল ঋণাত্মক ৩৯৪ কোটি টাকা। যা গত বছরের ৩০ জুন শেষে ছিল ঋণাত্মক ৬৫ কোটি টাকা।

সিঙ্গার বাংলাদেশের পরিচালক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) ও মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বণিক বার্তাকে বলেন, কভিড-১৯ এর প্রভাবে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই আমাদের বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। দুই ঈদেই আমাদের ৬০ শতাংশের মত পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে রমজানের ঈদে তেমন একটা ব্যবসা হয় নি। কুরবানির ঈদে এখন পর্যন্ত মোটামোটি ব্যবসা হয়েছে। তবে শপিংমল ও স্টোরগুলো সন্ধার মধ্যে বন্ধ করার বাধ্যবাধকতা থাকায় ব্যবসা কমেছে। আর বর্তমান বাস্তবতায় মানুষের মধ্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাইরে ইলেকট্রনিক্স পণ্য কেনার প্রবণতা কমেছে। 

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে সিঙ্গার বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৩৫ পয়সা, যা এর আগের বছরে ছিল ৯ টাকা ২০ পয়সা।

১৯৮৩ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিঙ্গার বাংলাদেশের মোট শেয়ারের মধ্যে ৫৭ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক, প্রতিষ্ঠান ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ, বিদেশী ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২০ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন