বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স সমীক্ষার তথ্য

করোনার প্রভাবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সংকট বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যবসায়ী শিল্প উদ্যোক্তাদের মাঝে মারাত্মকভাবে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান লাইট ক্যাসল পার্টনার্স (এলসিপি) তাদের করা বিজনেস কনফিডেন্স ইনডেক্স ২০১৯-২০ শীর্ষক সমীক্ষায় তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান এলসিপি সমীক্ষা প্রকাশ করে।

মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ৫৯টি খ্যাতনামা বিভিন্ন ব্যবসা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাক্ষাত্কারের ভিত্তিতে সমীক্ষাটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এলসিপি সহপ্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিজন ইসলাম সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ, মেট্টোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমএসসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি আসিফ ইব্রাহিম।

সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি। চলতি বছরের শুরু থেকেই বেসরকারি খাতে করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেএমন তথ্য দিয়েছে সমীক্ষাটি। তাদের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় আস্থা সূচক মাইনাস ১৯ দশমিক ২৭ পয়েন্টে নেমে আসে। অথচ ২০১৮ সালে একই সময়ে বেসরকারি খাতে এই সূচক ছিল প্লাস ৪৩ পয়েন্ট।

আস্থাহীনতা নিয়ে সমীক্ষায় আরো বলা হয়েছে, সময়ে চীন থেকে পোশাক শিল্পসহ রফতানিমুখী বিভিন্ন খাতের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় চাহিদা অনুযায়ী কাঁচামাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় উদ্যোক্তাদের মাঝে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। ফলে একটা সময় এই আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে এলসিপির পরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলমান অর্থনৈতিক ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়ে অর্থনীতি উদ্ধারের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনীতির নির্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে এখন প্রতিটি খাতকে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করার সময় এসেছে। তখনই আমরা পদ্ধতিগতভাবে সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে যেতে পারব বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৮০ শতাংশই মনে করেন, করোনার প্রভাবে গত ছয় মাসে দেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের ৪০ শতাংশ বলছেন, এর প্রভাবে পোশাক, টেক্সটাইল, চামড়া চামড়াজাত শিল্পে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা রয়েছে।

বেসরকারি খাতে নিম্নতর ঋণপ্রবাহ, সরকারি সঞ্চয় স্কিমে সুদহার কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে সংকট কাটিয়ে উঠতে ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা দরকার বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন