শুধু প্রাণিরাই দায়ী নয়, মানুষও বন্যপ্রাণির মধ্যে ছড়াচ্ছে ভয়ঙ্কর জীবাণু

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাঁদুর থেকে মধ্যবর্তী কোনো প্রাণির মাধ্যমে নভেল করোনাভাইরাস মানুষের দেহে এসেছে। এ নিয়ে গবেষণার যেন কোনো শেষ নেই! তবে প্যাথোজেন (রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব) সংক্রমণের জন্য বন্যপ্রাণিরাই কি শুধু দায়ী? মানুষও কি নয়? অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, মানুষের শরীরে এমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া (সুপারবাগ) আছে যা কিনা সুযোগ পেলে আশ্রয় নিতে পারে বন্যপ্রাণির দেহেও। 

ম্যাককুয়ারি ইউনিভার্সিটির বায়োলজিক্যাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিচেলে পাওয়ার গত ১৩ বছর ধরে অ্যান্টার্কটিকা থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত নানা জায়গায় মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণির মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা করে এসেছেন। এ নিয়ে পাওয়ার বলেন, ‘আমি মনে করি না, এমন কোনো প্রাণি আছে যার দেহে আমরা এটি (সুপারবাগ) পাইনি।’

পাওয়ার এমন প্রাণিকেই বেছে নিয়েছেন যারা মানুষের কাছাকাছি বাস করেছে কিংবা শহরে থেকেছে। যেমন, ইঁদুরজাতীয় প্রাণি পোসাম। যেসব প্রাণি বন্যপ্রাণি কেয়ার সেন্টার কিংবা ব্রিডিং প্রোগ্রামে মানুষের সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটিয়েছে তাদের নিয়েই গবেষণা করেছেন পাওয়ার ও তার দল। 

এখন পর্যন্ত অন্তত এক ডজন প্রাণির দেহে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখতে পেয়েছেন পাওয়ার। এসব প্রাণির মধ্যে রয়েছে বাঁদুর, পেঙ্গুইন, সি লায়ন ও ওয়ালাবি (ছোট প্রজাতির ক্যাঙ্গারু)। 

এ বিজ্ঞানী বলেন, ‘আপনার শরীরে এমন প্যাথোজেন আছে যা আমাদের থেকে প্রাণিদেহে যায় এবং সম্ভবত আবার আমাদের কাছেই ফিরে আসে। আগে ও পরে আসা-যাওয়ার বিষয়টি চিহ্নিত করা কঠিন হলেও এটা ঠিক, এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উত্থানের পেছনে অবদান রাখছে মানুষই।’

২০০৭ সালে বিপণ্ন রক ওয়ালাবির মল নিয়ে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন পাওয়ার। তখন নিউ সাউথ ওয়েলশের বন্দি জায়গায় বেড়ে উঠছিল ওয়ালাবিগুলো। এসব ওয়ালাবির অর্ধেকেরও বেশির মলের নমুনায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত করেন পাওয়ার। পরে ওইসব ওয়ালাবিকে বনে ছেড়ে দেয়া হয়। 

২০০৯ সালে গবেষণার পরিধি বাড়িয়ে পাওয়ার চলে যান অ্যান্টার্কটিকায়। সেখানে রিসার্চ স্টেশনে মানববর্জ্যের পাশাপাশি পেঙ্গুইন ও সি লায়ন নিয়েও গবেষণা করেন। সব মিলিয়ে, গবেষণায় তিনি মানুষ থেকে প্রাণিতে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পেয়েছেন। 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন