ডিএসসিইর সেমিনারে বক্তরা

লেখাপড়ার চেয়ে চাকরি নিয়ে উদ্বেগে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারি কোম্পানিগুলোতে এখন চলছে ছাঁটাই কার্যক্রম। নতুন নিয়োগ নেই বললেই চলে। তবে সরকারি চাকরিতে ছাঁটাই নেই বললেই চলে। যদিও নতুন নিয়োগে চলছে ধীরগতি। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে কর্মী ছাঁটাই অনেকটাই কমে এসেছে। তবে দেশীয় করেপারেটগুলোতে যেসব সদ্য শেষ করা শিক্ষার্থীরা চাকরিপ্রত্যাশী ছিলেন তারা অনেকটাই হতাশায় ভুগছেন। তাইতো স্নাতকোত্তর শেষ পর্যায়ে থাকা শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষ করার চেয়ে চাকরি বাজার নিয়ে বেশি উদ্বেগে রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (১৭ জুলাই) রাজধানীতে আয়োজিত ‘মেন্টাল ওয়েলবিং অ্যান্ড স্ট্রেচ ম্যানেজমেন্ট অব দি হিউম্যান বিং আন্ডার প্যান্ডেমিক সিচুয়েশন উইথ আনসার্টেইনিটি’ শীর্ষ সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। 

সেমিনারে এ সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রবন্ধের প্রাথমিক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ অধ্যাপক ড. আইরিন খান। 

এছাড়া ভূটানের রয়েল থিম্পু কলেজের বিজনেস বিভাগের প্রোগ্রাম লিডার মাধব ভার্মা এবং একই কলেজের শিক্ষার্থী টেনজিং চোডেং, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান, ভারতের ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ইউইএম) অধ্যাপক ড. সুব্রত চট্টপাধ্যায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকসের (ডিএসসিই) আয়োজনে ডিএসসিইর উদ্যোক্তা অর্থনীতি বিভাগের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএসসিইর গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। 

সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন উদ্যোক্তা অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেহানা পারভীন ও সারাহ তাসনীম।

ড. আইরিন খান বলেন, দেশের কয়েকটি বহুজাতিক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারের আমলাদের কাছ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মী ছাঁটাই নেই বললেই চলে। তবে নতুন নিয়োগ খুব বেশি হচ্ছে না। আবার করপোরেট প্রতিষ্ঠানে নতুন নিয়োগ যেমন খুব সীমিত তেমনি চলছে ছাঁটাই। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ কাজ করছে। আবার সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়া ও চাকরির বাজার নিয়ে বেশ শঙ্কায় দিন পার করছেন। অনেক ক্ষেত্রে উদ্বেগ কমাতে টেলিভিশন দেখা কমিয়ে দিচ্ছেন তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরির সুরক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বেতন এবং অন্যান্য অর্থ প্রদান যথাযথ সময়ে হলে উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, বর্তমান সময়ে দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা বেশ চাপে আছে। ইতিবাচক চিন্তা পারে মানুষকে উদ্বেগমুক্ত রাখতে। সেখানে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানসিক প্রশান্তি চাইলে অবশ্যই চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক করতে হবে।

প্রবন্ধগুলোর ওপর প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন কানাডার অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাজ্জাদ হোসেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বিজনেস প্রশাসনের ডিন ড. মো. মনিরুল ইসলাম, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ খান, ভারতের এমটিসি গ্লোবালের অধ্যাপক ড. ভোলানথ দত্ত ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসিওলোজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আবু সাইদ খান।

ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, দেশের সংবাদপত্রগুলো মানুষের উদ্বেগ কমাতে সহযোগী হতে পারে। এক্ষেত্রে বেশি করে ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে মানুষ আশাবাদী হতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন