জনসংখ্যার প্রজনন হার- এর ধারণার সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। পরিষ্কার করে বললে, একজন মা তার প্রজননকালীন সময়ে (১৪ হতে ৪৯ বছর বয়সে) গড়ে কতজন শিশুর জন্ম দিচ্ছেন, সেই সংখ্যাটাকেই জনসংখ্যার প্রজনন হার বলা হয়। প্রজনন হার বেশি হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি দ্রুত ঘটে, আবার কম হলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি কম ঘটে কিংবা অনেক সময় জনসংখ্যা কমতে থাকে। জনসংখ্যার প্রজনন হার এর মত করোনা রোগেরও একটি প্রজনন হার আছে যাকে রোগতত্ত্বের ভাষায় প্রজনন সংখ্যা বা রিপ্রোডাকশন নাম্বার বা আর নট (Ro) বলা হয়। অর্থাৎ করোনায় আক্রান্ত একজন রোগী তার রোগাক্রান্ত সময়ের মধ্যে গড়ে কতজন নতুন রোগীকে সংক্রমিত করছে।
মজার ব্যাপার হলো যে এই প্রজনন সংখ্যাটি প্রথমে সূত্রপাত হয়েছিল জনমিতিতে, নতুন শিশু যারা জন্মগ্রহণ করেছিল তাদের গণনা করার ক্ষেত্রে। এই প্রজনন সংখ্যাটি বেশি হলে সংক্রমণের হার বেশি হয় অন্যদিকে তা কম হলে সংক্রমণের হার কম হয়। সুনির্দিষ্ট করে বললে, সাধারণত এই প্রজনন সংখ্যাটি একের বেশি হলে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, আর একের কম হলে রোগটির বিস্তার দ্রুত কমে আসে এবং এক পর্যায়ে সংক্রমণের হার শূন্যের কোটায় চলে আসে। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলি। প্রজনন সংখ্যাটি ১ দশমিক ৫ বলতে বোঝায় একজন রোগী সংক্রামক থাকা অবস্থায় গড়ে ১ দশমিক ৫ জনকে সংক্রমিত করে। অর্থাৎ চারজন রোগী ছয় জনকে, আবার ছয়জন রোগী ৯ জনকে সংক্রমিত করছে। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির এই ধারাটিকে এক্সপোনেনশিয়াল বৃদ্ধির ধারা বলা হয়। অন্যদিকে প্রজনন সংখ্যাটি দশমিক ৭৫ হলে বোঝায় চারজন রোগী তিনজনকে, আবার তিনজন রোগী ২ দশমিক ২৫ জনকে সংক্রমিত করছে। এভাবে রোগীর সংখ্যা এক পর্যায়ে শূন্যের দিকে ধাবিত হয়। ফলে যে কোনো মহামারীর ক্ষেত্রে প্রজনন সংখ্যাটিকে ১ এর নিচে নিয়ে আসার প্রাণান্ত চেষ্টা করা হয়।
সাধারণত একজন মানুষের করোনা ভাইরাসের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ৪-৫ দিনের মধ্যেই লক্ষণ দেখা দেয়, যেটাকে রোগতত্ত্বের ভাষায় ইনকিউবেশন পিরিওড বলা হয়, যেটি সর্বোচ্চ ১৪ দিন পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত ইনকিউবেশন পিরিয়ড একজন করোনা রোগী সংক্রমণ ছড়ায় না। আর লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর সর্বোচ্চ নয়-দশ দিন ধরে একজন রোগী সংক্রমণ ছড়াতে পারে, যেটাকে রোগতত্ত্বের ভাষায় সংক্রামক ব্যাপ্তি বলা হয়। তবে লক্ষণ দেখা দেওয়ার দুই-তিন দিন আগে থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনটি দেখা গেছে। আবার লক্ষণ দেখা দেওয়ার তিন-চার দিনের মধ্যে একজন রোগী অন্যকে সংক্রমিত করার সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকে। রোগের বিস্তারের জন্য মূলত প্রত্যেক রোগীর এই সংক্রামক ব্যাপ্তি বা কালকে মূলত দায়ী করা হয় কারণ সেটা রোগের প্রজনন সংখ্যাটিকে বাড়িয়ে দেয় যদি ঠিকমতো বিস্তার রোধ করা সম্ভব না হয়। সেজন্য করোনা রোগের বিস্তার রোধে একজন রোগীকে অন্তত এই সময়টাতে পরিবারের সদস্য সহ অন্য সবার কাছ থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। যেটাকে আমরা আইসোলেশনে থাকা বলি। এবং যারা সমূহ আক্রান্তের ঝুঁকির মধ্যে থাকেন তাদেরও আলাদা থাকতে হয় যেটাকে আমরা কোয়ারেন্টাইনে থাকা বলি।
যে কোনো রোগের প্রজনন সংখ্যাটি একটি ধারণার উপর ভিত্তি করে বের করা হয়। ধরা হয় যে কারো মধ্যে কোন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইতিমধ্যে গড়ে ওঠেনি এবং সকলের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা সমান থাকবে। কিন্তু বাস্তবে এই ধারণাটি বা অ্যাসাম্পশনকটি ঠিক থাকে না। বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এমনিতেই গড়ে ওঠে। যদিও সম্প্রতি করোনার বিভিন্ন গবেষণায় জানা যাচ্ছে যে এই ধরনের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বেশিদিন টেকসই হয় না। প্রতিদিনের রোগ প্রজনন সংখ্যা বের করতে হলে উপরোক্ত অ্যাসাম্পশনের বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা না গড়ে ওঠার ধারণাটির ব্যত্যয় ঘটে। ফলে রোগ তত্ত্বের ভাষায় দৈনন্দিন রোগের প্রজনন সংখ্যাকে নতুন নামে রোগের কার্যকরী প্রজনন সংখ্যা বা এফেক্টিভ রিপ্রোডাকশন নাম্বার বা আর টি (Rt) হিসেবে ডাকা হয়। এই কার্যকরী প্রজনন সংখ্যাকে বের করার জন্য প্রধানত দৈনন্দিন কি পরিমান সংক্রমণ ধরা পড়ছে, মৃত্যুবরণ করছেন এবং আরোগ্য লাভ করছেন সে সংখ্যাগুলো জানা থাকতে হয়। দৈনন্দিন সংক্রমনের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকলে ‘আর টি’ এর মান কমতে থাকে। অন্যদিকে তা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে ‘আর টি’ -এর মান বাড়তে থাকে। এই ‘আর টি’ এর মান ‘আর নট’ এর থেকে সব সময় কম হয়। করোনাভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক রোগ হওয়ায় এর ‘আর টি’ এর মান জানা থাকা অত্যন্ত দরকার।
কোন রোগের সংক্রমণের বিস্তারের মাত্রা জানবার এই পদ্ধতিটি দুনিয়াজুড়ে সবাই ব্যবহার করে থাকে। করোনা রোগের ক্ষেত্রে সেটি নিয়ে রীতিমতো আলোচনা-পর্যালোচনাও হতে দেখা যায় পৃথিবীর নানান দেশের বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্রিকায়। কিন্তু তেমনটি আমাদের দেশে একেবারেই চোখে পড়ে না। প্রায় সব দেশেই জাতীয় ভাবে তো বটেই, অনেকে আবার বিভিন্ন এলাকা বা প্রশাসনিক আঞ্চলিকতার ভিত্তিক আর টি এর মান বের করে সংক্রমনের বিস্তারের মাত্রা সম্পর্কে ধারণা নেয়। এবং সে অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত নেয় যেমন পুনরায় কখন খুলবে স্কুল ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ছোট ছোট কল কারখানা বা চলমান লকডাউন কখন বন্ধ হবে বা সামাজিক দূরত্ব কখন শিথিল করা হবে ইত্যাদি। অথবা ইতিপূর্বে গৃহীত সংক্রমণ কমানোর ব্যবস্থাগুলি কতটা কার্যকরী হচ্ছে, সেটা সঠিক ভাবে বোঝার জন্য আর টি এর মান সরাসরি সাহায্য করে থাকে। আমাদের দেশেও জাতীয়ভাবে তো বটেই বিভাগ বা জেলা বা ঢাকা সহ বড় শহর ভিত্তিক আর টি এর মান বের করা অত্যন্ত দরকার। এবং সে অনুযায়ী উপরোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং পাশাপাশি সংক্রমনের মাত্রাকে একটা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে করণীয় কি সেটা প্রতিনিয়ত পর্যালোচনা করা উচিত। অর্থাৎ সংক্রমন বিস্তারের গতি প্রকৃতি কি হবে সে ব্যাপারে মোটাদাগে একটা পূর্বাভাস পাওয়া যায়। আমাদের দেশে আর টি এর মান বের করার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রবিশেষে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে এটি যেমন সত্য, অন্যদিকে তথ্য-উপাত্ত থাকা সত্ত্বেও আর টি এর মান বের করা হচ্ছে না। আবার সঠিকভাবে আর টি এর মান বের করার ক্ষেত্রে প্রাপ্ত দৈনন্দিন শনাক্তের তথ্যের উপযোগিতা নিয়েও বড় ধরনের প্রশ্ন আছে।
চীনের উহানে ২০২০ সালের শুরুতে যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল তার আর নট ছিল ১.৪ থেকে ৫.৭। যদিও পরবর্তীতে গবেষকেরা এর বিভিন্ন মান পেয়েছেন। উল্লেখ্য আর নট এর মান ভিন্ন ভিন্ন দেশের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। আবারও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে ভিন্ন ভিন্ন ফর্মুলা ব্যবহারের জন্য। করোনাভাইরাস এর চেয়েও অতি সংক্রামক রোগ যে নেই তা নয়। যেমন মেসলেজ ভাইরাস রোগ যার আর নট ছিল ১২ থেকে ১৮ মধ্যে। মাম্পস রোগের ক্ষেত্রে এটি ১০। মনে হতে পারে কেন মেসলেজ ও মাম্পস অতি সংক্রামক রোগ হওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের মত ছড়াচ্ছে না। এর কারণ হলো এই রোগ গুলির টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে এবং মানুষ আজকাল এগুলো নিচ্ছে। আবার করোনাভাইরাসের কাছাকাছি অনেক পরিচিত সংক্রামক রোগ আছে। যেমন এইচ আই ভি যার আর নট ছিল ৪। সৌদি আরবে ২০১৪ সালে মার্স নামে যে ভাইরাস জনিত রোগ দেখা দিয়েছিল তার আর নট ছিল শূন্য দশমিক ৪৫ থেকে ৩ দশমিক ৯। আবার ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা দেওয়া ইবোলা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এটি ছিল ১ দশমিক ৫ থেকে ২ দশমিক ৫। হংকংয়ে ২০০৩ সালে দেখা দেওয়া সার্স এর ক্ষেত্রে এটি ছিল ১ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ৫। এমনকি ১৯১৮ সালে যে সোয়াইন ফ্লু ভাইরাসের দেখা দিয়েছিল যার কারণে বিশ্বব্যাপী ৫ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল তার আর নট ছিল ১ দশমিক ৪ থেকে ২ দশমিক ৮। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের মতো একমাত্র এই সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস সে সময় অনেকটা ভয়ঙ্কর ও দানবীয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল।
আমাদের দেশে করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে আর নট বা ‘আর টি’ এর মান কত সেটা নিয়ে খুব বেশি প্রকাশিত তথ্য- উপাত্ত আছে বা আলোচনা হয়েছে সেটা আমার চোখে পড়েনি। সর্বশেষ জুলাইয়ের ১৪ তারিখ পর্যন্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে কোরি মডেল অনুযায়ী বের করা ‘আর টি’ এর মান যা পাওয়া যায় তা নিম্নরূপ (চিত্রে দেখুন)। বাংলাদেশে ১৩ মার্চ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত পাওয়া ‘আর টি’ ০ দশমিক ১২৪ থেকে ৮ দশমিক ৯৩ এর মধ্যেই ছিল। সর্বোচ্চ ‘আর টি’ ধরা পড়েছিল এপ্রিলের ৭ তারিখে যেদিন ১ জন আক্রান্ত করোনা রোগী গড়ে সর্বোচ্চ প্রায় নয় জনকে নতুন ভাবে সংক্রমিত করেছিল। অন্যদিকে সর্বনিম্ন আর টি ধরা পড়েছিল মার্চের ২৯ তারিখে যেদিন ১ জন আক্রান্ত করোনা রোগী গড়ে সর্বনিম্ন প্রায় ০ দশমিক ১২৪ জনকে নতুন ভাবে সংক্রমিত করেছিল। উপরোক্ত সময় কালীনে আর টি এর মধ্যক পাওয়া গেছে ১ দশমিক ২৬। অর্থাৎ বলা চলে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রতি চারজন আক্রান্ত করোনা রোগী গড়ে পাঁচ জনকে নতুন ভাবে সংক্রমিত করেছে। আবার ১৪ জুলাই যে আর টি এর মান পাওয়া গেছে তা হল দশমিক ৯৯। অর্থাৎ বলা চলে ১৪ ই জুলাই ১ জন আক্রান্ত করোনা রোগী গড়ে ১ জনকে নতুন ভাবে সংক্রমিত করেছে। শুরুর দিকে অনেক ওঠানামা করলেও মে মাসের শুরু থেকে আর টি এর মান স্থিতি অবস্থায় আসে এবং তা ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৬ এর মধ্যেই উঠা নামা করতে দেখা যায় জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত। জুনের মাঝামাঝি হতে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত যা আবার ১ দশমিক ২ হতে একের মধ্যে থাকতে দেখা যায়। জুলাইয়ের ৩ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত আর টি এর মান একের নিচে নেমে আসে!
উপরোক্ত ‘আর টি’ এর বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে জুলাইর তিন তারিখ থেকে সংক্রমণের বিস্তারে মাত্রা অনেক কমে এসেছে। ‘আর টি’ এর মান এক এর নিচে নেমে আসায় করোনা মহামারী দ্রুতই কমে আসবে তাত্ত্বিক ভাবে এমনটি মিলছে। জুলাইর তিন তারিখ হতে আবার প্রতিদিনের শনাক্তের সংখ্যাও উপরোক্ত তাত্ত্বিক ফলাফলকে পুরোপুরি সহযোগিতা করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ফি নির্ধারণ, বন্যা, কেবলমাত্র লক্ষণ ভিত্তিক টেস্ট করার সিদ্ধান্ত কিংবা টেস্ট কিট এর সংকটের কারণে জুলাইয়ের ৩ তারিখ হতে প্রতিদিন কম নমুনা সংগৃহীত হচ্ছে ও পরীক্ষা করা হচ্ছে। জুলাইয়ের ৩ তারিখ পূর্ব ও উত্তর নমুনা সংগ্রহের মৌলিক ও কৌশলগত পার্থক্যের কারণে আসলে সংক্রমনের সংখ্যা বাড়লেও শনাক্তের সংখ্যা বর্তমানে কমছে। ফলে জুলাইয়ের ৩ তারিখ হতে প্রাপ্ত প্রতিদিনের শনাক্তের সংখ্যার উপযোগিতা পূর্বের ন্যায় না থাকায় সঠিক ভাবে আর টি এর মান বের করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বর্তমানে ‘আর টি’ এর মান ১ এর নিচে নেমে আসলেও প্রকৃতপক্ষে তা সংক্রমণ বিস্তারের প্রকৃত চিত্রকে তুলে ধরতে পারছে না। তবে ব্যাপকভাবে টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, যথাযথ আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে সংক্রমণ বিস্তারের মাত্রার ক্রম ধারাকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারলেই, কেবল মাত্র প্রকৃত আর টি এর মান বের করা সম্ভব হবে।
লেখক: গবেষক ও সহযোগী অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়