করোনার সময়ে গ্রামীণফোনের ব্যবসা ও মুনাফা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বছরের ২৬ মার্চ থেকে দুই মাসেরও বেশি সময় দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি বলবৎ ছিল। সাধারণ ছুটিকালীন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম শ্লথ হয়ে পড়ে। ফলে চলতি ২০২০ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোনের ব্যবসা মুনাফা দুটোই কমেছে।

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, চার মাস ধরে একটি নজিরবিহীন বৈশ্বিক মহামারী আমাদের কাজের ধরনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। আমাদের কাজের ধরন থেকে শুরু করে গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। কভিড-১৯-এর সঙ্গে বৈরী আবহাওয়া রেগুলেটরি বাস্তবতার কারণে গত বছরের তুলনায় ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব অর্জনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

চলতি হিসাব বছরের অর্ধবার্ষিক (জানুয়ারি-জুন) সময়ের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় হয়েছে হাজার ৯২৪ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব ছিল হাজার ৯০ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব কমেছে দশমিক ৩৫ শতাংশ। আর চলতি হিসাব বছরের দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে দশমিক শতাংশ। অর্ধবার্ষিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৩ টাকা ৩০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ১৩ টাকা ৩৭ পয়সা।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের রাজস্ব আয় হয়েছে হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ছিল হাজার ৬০৪ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব কমেছে দশমিক ২৪ শতাংশ। আর আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা ৭২৬ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৯৫৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ২৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে টাকা ৩৮ পয়সা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল টাকা পয়সা। ৩০ জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা। চলতি ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৩০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোনের পর্ষদ। রেকর্ড ডেট আগস্ট।

গ্রামীণফোনের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ইয়েন্স বেকার বলেন, সাধারণ ছুটি থাকায় দেশের অর্থনীতির শ্লথগতির কারণে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন চ্যালেঞ্জিং সময় পার করেছে। তবে মে থেকে অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন শুরু হয়েছে। ইন্টারনেট সেবায় প্রবৃদ্ধি ঠিক থাকলেও দ্বিতীয় প্রান্তিকে রাজস্ব অর্জন নেটওয়ার্কে গ্রাহক সংখ্যায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে আমাদের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে কভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারকে আমাদের প্রযুক্তি সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে।

বছরের জুন শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা কোটি ৪৫ লাখে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে কোটি লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। সময়ে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। ১৩২টি নতুন ফোরজি সাইট স্থাপন করা হয়েছে। জুন শেষে মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫৫৭।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন