দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় মার্চের শুরুর দিকে। এরপর চার মাসের বেশি সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না বর্তমানে। একদিকে যেমন সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ছে, এর সঙ্গে একটু একটু করে বাড়ছে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হারও।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দুই সপ্তাহ আগে ১ জুলাই দেশে ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণ শনাক্তের হার ছিল ২১ দশমিক ১২ শতাংশ। এর এক সপ্তাহের মাথায় ৮ জুলাই এ হার ছিল ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ। মঙ্গলবারের বুলেটিনে ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ হারে সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ২৩ শতাংশে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের বুলেটিনেও সারা দেশে একদিনে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষের নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গতকাল সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ২টি। এসব নমুনা পরীক্ষা করে কভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তকৃত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯০-এ।
এ ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৩ জন কভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, এ নিয়ে দেশে করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৭-এ।
এছাড়া এ ২৪ ঘণ্টায় আরো ১ হাজার ৭৯৬ জন সুস্থ হয়ে ওঠার কথা জানানো হয় বুলেটিনে। এ নিয়ে সারা দেশে সংক্রমণ শনাক্তের পর সুস্থ হয়ে ওঠা মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ২৩।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, এখন পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪০২টি। মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে এখন পর্যন্ত শনাক্তকৃত রোগীর হার ১৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বর্তমানে দেশের ৭৯টি গবেষণাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
তিনি আরো জানান, এ ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৩৩ জনের মধ্যে পুরুষ ও নারীর সংখ্যা যথাক্রমে ২৭ ও ছয়। মৃতদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিভাগের, সাতজন চট্টগ্রাম, দুজন রাজশাহী, তিনজন রংপুর ও পাঁচজন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। বাসায় মারা গিয়েছেন ছয়জন।