করোনার ভুয়া রিপোর্ট

সাতক্ষীরার সীমান্ত থেকে সাহেদ গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা ছাড়াই ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার ঘটনায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল ভোরে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গ্রেফতার এড়াতে কাঁচা-পাকা চুলে কলপ এবং গোঁফ ছেঁটে বেশ পাল্টেছিলেন সাহেদ। এতদিন বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে কুমিল্লা, কক্সবাজার সাতক্ষীরায় আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।

সাহেদকে গ্রেফতারের পর হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় এনে প্রথমেই নেয়া হয় র‌্যাব সদর দপ্তরে। সেখান থেকে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেয়া হয় হাসপাতালে। এরপর তাকে নিয়ে উত্তরার একটি অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব।

পরে সংবাদ সম্মেলনে এসব ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, মামলা হওয়ার পর পরই সাহেদ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আত্মগোপনের চেষ্টা চালান। ঢাকা থেকে তিনি কুমিল্লা, কক্সবাজার সাতক্ষীরায় গিয়েছেন। গত সাত-আটদিনের মধ্যে সাহেদ একাধিকবার ঢাকায়ও এসেছেন। কখনো নিজস্ব গাড়িতে যাতায়াত করেছেন, কখনো ভাড়া গাড়ি, কখনো ট্রাকে আবার কখনো পায়ে হেঁটেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাতায়াত করেছেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে টকশোতে আসা কাঁচা-পাকা চুলের সাহেদ গ্রেফতার এড়াতে বেশ পাল্টে ফেলেছিলেন। কলপ দিয়ে চুল কালো করার পাশাপাশি গোঁফও ছেঁটে ফেলেন তিনি। পোশাকেও এনেছিলেন পরিবর্তন। তবে এত কিছুর পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর তিনি এড়াতে পারেননি। পার্শ্ববর্তী দেশে নৌকায় করে পালিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশ কোস্ট গার্ডের সহযোগিতায় সাহেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

র‌্যাবের ডিজি বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সাহেদ সম্ভাব্য কোন কোন পথে দেশ ছাড়তে পারেন, সে সম্পর্কে র‌্যাবকে ধারণা দেন। জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর থেকে সাহেদ গা ঢাকা দেন। তার সন্ধানে র‌্যাব ঢাকা ঢাকার বাইরে অভিযান চালায়। বুড়িমারী, সাপাহার সীমান্ত সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকায়ও র‌্যাব নজরদারি বাড়ায়।

প্রসঙ্গত, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করে রিজেন্ট হাসপাতাল টাকার বিনিময়ে নভেল করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ চিকিৎসা এবং ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে আসছিল। জুলাই এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব প্রথমে রিজেন্টের উত্তরা শাখা পরে মিরপুর শাখা এবং রিজেন্টের প্রধান কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। পরদিন র‌্যাব--এর পক্ষ থেকে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলার নম্বর আসামি সাহেদ।

র‌্যাবপ্রধান বলেন, রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে কভিড-১৯-এর প্রায় ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ছয় হাজারের মতো ভুয়া রিপোর্ট দেয়া হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন। এছাড়া সাহেদ একদিকে রোগীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে টাকা চেয়ে বিলও জমা দিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন