সময়ের ভাবনা

করোনা সংক্রমণ: শেষ কোথায়?

ড. মুহাম্মদ নুরে আলম ছিদ্দিকী

কয়েক মাস ধরে গবেষকদের বিরামহীন কাজের ফলে আমরা করোনাভাইরাস সম্পর্কে স্বল্পতম সময়ে বৈজ্ঞানিক অনেক কিছু জানতে পেরেছি এবং প্রতিনিয়ত আরো অনেক কিছু জানতে পারছি। আজকের লেখায় নভেল করোনাভাইরাস এবং কভিড-১৯ সম্পর্কে কিছু তথ্য সংক্ষেপে তুলে ধরব।

করোনাভাইরাস মানুষসহ অন্য আরো অনেক প্রাণীর অনেক আগে থেকেই সংক্রমণ করে আসছে। আমরা জানি বাদুড় হলো করোনার প্রাথমিক বাহক এবং চীনে এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা চীন অঞ্চলে বাদুড়ের শরীরে ৫০০-এর বেশি ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন এবং ধারণা করছেন এমন প্রায় পাঁচ হাজার ধরনের করোনাভাইরাস থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত মানুষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম এমন সাত ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। মানুষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম ভাইরাসগুলো হলো হিউম্যান করোনাভাইরাস OC43 (HCoV-OC43), হিউম্যান করোনাভাইরাস HKU1 (HCoV-HKU1), হিউম্যান করোনাভাইরাস 229E (HCoV-229E), হিউম্যান করোনাভাইরাস NL63 (HCoV-NL63), মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম-রিলেটেড করোনাভাইরাস (MERS-CoV) বা মার্স করোনাভাইরাস, সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম করোনাভাইরাস (SARS-CoV) বা সার্স করোনাভাইরাস এবং সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম করোনাভাইরাস (SARS-CoV2) বা সার্স করোনাভাইরাস ২। এই সার্স করোনাভাইরাস সৃষ্ট সংক্রমণকেই আমরা কভিড-১৯ নামে চিনি।

উল্লিখিত সাতটির মধ্যে প্রথম চারটি ভাইরাস মানুষের শরীরে তেমন গুরুতর সংক্রমণ করে না। এই চারটি ভাইরাসের সংক্রমণে শরীরে সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। ধারণা করা হয়, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সাধারণ ঠাণ্ডা এই আটটি ভাইরাসের সংক্রমণে হয়। বাকি তিনটি মানুষের শরীরে গুরুতর সংক্রমণ করতে সক্ষম। আর এই তিনটি সংক্রমণ গত ২০ বছরের মধ্যেই ঘটেছে। মানুষের শরীরে সংক্রমণ করতে সক্ষম ভাইরাসগুলো বাদুড় থেকে জুনোটিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে মানবশরীরে প্রবেশ করে। ধারণা করা হয়, নভেল করোনাভাইরাস সরাসরি বাদুড় থেকে মানুষকে সংক্রমিত করে না। প্রথমে বাদুড় থেকে এক বা একাধিক অন্তর্বর্তী হোস্টকে সংক্রমিত করে সেখানে তারা জেনেটিক মিউটেশনের মাধ্যমে মানুষকে সংক্রমিত করার মতো সক্ষমতা অর্জন করে। সার্স -এর ক্ষেত্রে এই অন্তর্বর্তী হোস্ট ছিল এক ধরনের বন্য বিড়াল, যাকে সিভেট ক্যাট বলা হয়। মার্সের ক্ষেত্রে এই অন্তর্বর্তী হোস্ট ছিল উট। সার্স -এর ক্ষত্রে অন্তর্বর্তী হোস্টটি কী ছিল অথবা ভাইরাসটি সরাসরি বাদুড় থেকে মানুষকে সংক্রমিত করেছে কিনা, বিজ্ঞানীরা তা এখনো নিশ্চিত নন। সার্স ল্যাবরেটরি থেকে ছড়ানোএটা বিশ্বাস করা মানুষের সংখ্যাই বেশি বলে মনে হয়। অনেক মানুষের ধারণা, তা বৃহৎ কোনো উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে বা ভুলবশত ল্যাবরেটরিতে কাজ করা মানুষের মাধ্যমে ল্যাব থেকে ছড়ানো। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তেমনটি মনে করেন না। ভাইরাসের গতিপ্রকৃতি, মিউটেশন ইত্যাদি গভীরভাবে লক্ষ করলে এটি প্রকৃতিগতভাবে সৃষ্টি বলেই মনে হয়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম প্রাদুর্ভাব সার্স সংক্রমণ ২০০২ সালে ১৬ নভেম্বর প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল চীনের গুয়াংডংয়ে। মোটামুটি আট মাস ধরে চলা প্রাদুর্ভাবটি ২৯টি দেশের হাজার ৯৮ জন মানুষকে সংক্রমিত করে, যার মধ্যে ৭৭৪ জন মৃত্যুবরণ করে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় প্রাদুর্ভাব মার্স সংক্রমণ জুন ২০১২ সালে সৌদি আরবে প্রথম শুরু হয়। সংক্রমণটি এখনো মাঝে মাঝে আসতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত হাজার ৫২১ জনকে ভাইরাসটি সংক্রমিত করতে সক্ষম হয়েছে, যার মধ্যে ৮৬৬ জনই মৃত্যুবরণ করে। সবচেয়ে বেশি ৩৪ শতাংশ সংক্রমিত মানুষের মৃত্যু ঘটে ভাইরাসের ক্ষেত্রে। করোনাভাইরাসের তৃতীয় এবং সবচেয়ে ভয়ংকর সংক্রমণ সার্স ২। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্তের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ব্যাপক মহামারী আকার ধারণ করেছে।

সার্স মহামারী আকার ধারণ করার অনেকগুলো কারণ আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, আমরা জানি ভাইরাসটি অনেক সংক্রামক এবং লক্ষণ প্রকাশের সময় অনেক বেশি। সিজনাল ফ্লু, সার্স এবং মার্সের ক্ষেত্রে যেটা সাধারণত এক থেকে ছয় বা সাতদিন; কিন্তু সার্স -এর ক্ষেত্রে চার থেকে ১৪ দিন। এই লম্বা সময়ে ভাইরাসটি কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করলেও সক্রিয়ভাবে ছড়াতে সক্ষম, তার সঙ্গে অনেকের শরীরে ভাইরাসটি লক্ষণহীন থাকে। ভাইরাসটির ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী হোস্টটি কী ছিল, তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। অতি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে ভাইরাসটি চীন থেকে ছড়ানোর পর অনেকগুলো ছোট মিউটেশন হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো D614G মিউটেশন। মাত্র একটি অ্যামিনো অ্যাসিড অ্যাস্পার্টিক অ্যাসিড থেক গ্লাইসিন হয়ে ভাইরাসটি ১০ গুণ বেশি সংক্রমণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, বাংলাদেশেও এই পরিবর্তিত ভাইরাসটিই বেশি সংক্রমিত করেছে। ভাইরাসটি ছড়ানোর প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষের মনে কিছুটা ভুল ধারণা ছিল, সঙ্গে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক কারণ তো ছিলই। মানুষ ভেবেছিল সার্স মার্সের মতো ভাইরাস হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই অটো মিউটেটেড হয়ে চলে যাবে অথবা তাপমাত্রা বা আর্দ্রতা বাড়লে সিজনাল ফ্লুর মতো সংক্রমণ কমে আসবে। তাই মানুষ মহামারী ঠেকানোর পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এক বা একাধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন আসার আগ পর্যন্ত এমনকি ভ্যাকসিন আসার পরেও মানুষকে ভাইরাসকে মোকাবেলা করেই চলতে হবে। আর ভাইরাস মোকাবেলায় সারা বিশ্বে তিনটি নিয়ম অতিসতর্কতার সঙ্গে পালন করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। নিয়ম তিনটি হলো, বাইরে সবসময়ই সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার করা; একে অন্যের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা; নিয়মিত হাত জীবাণুমুক্ত করা।

এখন প্রশ্ন হলো, এক বা একাধিক কার্যকরী ভ্যাকসিন পেতে কতদিন লাগতে পারে? বিজ্ঞানীদের জন্য ল্যাবরেটরিতে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করা তেমন একটা কঠিন সময়সাপেক্ষ কাজ নয়। কিন্তু ভ্যাকসিনটি মানুষের শরীরে প্রয়োগের আগে ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) অনুমোদন নিতে হয়। একটি ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে প্রয়োগের আগ পর্যন্ত স্তরগুলো হলো: অনুসন্ধানী স্টেজ, প্রাক-ক্লিনিক্যাল স্টেজ, ক্লিনিক্যাল ডেভেলপমেন্ট, নিয়ন্ত্রক পর্যালোচনা এবং অনুমোদন, উৎপাদন মান নিয়ন্ত্রণ।

একটি ভ্যাকসিন পরীক্ষার প্রক্রিয়াগুলো নিম্নরূপ

ল্যাবরেটরিতে একটি ভ্যাকসিন তৈরির পর প্রথমে প্রাণীর দেহে পরীক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে ইঁদুর বা বানরের মতো প্রাণীগুলোর ওপর প্রয়োগ করা হয় এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে কিনা দেখার জন্য। তারপর ধাপ ট্রায়ালে সুরক্ষা এবং ডোজ পরীক্ষা করার পাশাপাশি এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জাগ্রত করতে সক্ষম কিনা, তা নিশ্চিত করার জন্য ২০ থেকে ১০০ জন মানুষকে প্রয়োগ করা হয়। ধাপ ট্রায়ালে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জাগ্রত করার সক্ষমতা এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিভিন্ন বয়সী মানুষের শরীরে দেখা হয়। সাধারণত বিভিন্ন বয়সী মানুষকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে কয়েকশ জনকে নির্বাচন করে তাদেরকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। ধাপ ট্রায়ালে কয়েক হাজার মানুষকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয় এবং তা ভ্যাকসিন না পাওয়া মানুষের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এই ধাপে ভ্যাকসিনের সুরক্ষা, কার্যকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কন্ট্রোল গ্রুপের সঙ্গে তুলনা করা হয়। প্রতিটি ধাপের ফল পর্যালোচনা করে তারপর এফডিএ ভ্যাকসিন অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। পুরোপুরি অনুমোদনের আগে কোনো ভ্যাকসিনের ইমার্জেন্সি প্রয়োগের অনুমোদনও দিয়ে থাকতে পারে।

একটি কার্যকরী ভ্যাকসিনের জন্য গবেষকদের কয়েক বছর থেকে এমনকি কয়েক দশকের গবেষণার প্রয়োজন হয়। এক দশকের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীরা একটি কার্যকরী এইচআইভি ভ্যাকসিনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু অনেক কারণে তা এখনো সম্ভব হয়নি। সার্স -এর জিনোম এবং সংক্রমণের ভয়াবহতা জানার পর থেকেই বিজ্ঞানীরা অতি দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে গবেষকরা নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ১৩৫টিরও বেশি ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছেন। বর্তমানে কভিড-১৯-এর জন্য প্রাক-ক্লিনিক্যাল ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ হচ্ছে ১২৫টির বেশি। ধাপ ট্রায়ালে আছে আটটি ভ্যাকসিন। ধাপ ট্রায়ালে আছে আটটি ভ্যাকসিন। ধাপ ট্রায়ালে আছে দুটি ভ্যাকসিন। কয়েকটি ভ্যাকসিনের ধাপ পরীক্ষা একসঙ্গে চালানোর চেষ্টা চলছে দ্রুততার জন্য। খুব সম্ভবত বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে এক বা একাধিক কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হবে। সম্ভবত করোনা ভ্যাকসিন সবচেয়ে দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। কোনো একটি ভ্যাকসিন যদি পরিপূর্ণ কার্যকরী না- হয়, তবুও সম্ভবত অনুমোদন পাবে। কিন্তু অনুমোদিত ভ্যাকসিন প্রান্তিক মানুষের হাতে পৌঁছতে কতদিন লাগবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। অনুমোদিত ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেয়া হবে ফ্রন্টলাইনার বয়স্কদের।

সাধারণত করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরে সক্রিয় অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাসকে নিউট্রালাইজ করতে সক্ষম। আমি নিজের হাতে কাজ করে দেখেছি কিছু মানুষের শরীরে খুবই সক্রিয় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা ভাইরাসকে সম্পূর্ণভাবে নিউট্রালাইজ করতে সক্ষম (খুব শিগগির বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হবে) এটা বিজ্ঞানীদের আশান্বিত করছে যেহেতু ইনফেকশনের কারণে ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানবশরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, সেহেতু ভ্যাকসিন দ্বারাও অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল এবং তা ভাইরাসকে নিউট্রালাইজ করতে সক্ষম হবে। যদিও অতি সাম্প্রতিক প্রকাশিত নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোনো ব্যক্তি কভিড-১৯ থেকে মুক্তিলাভের পর তার শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডিগুলো মাত্র দুই থেকে তিন মাস স্থায়ী হতে পারে। যদি সত্যিই অ্যান্টিবডিগুলো দুই থেকে তিন মাসের বেশি স্থায়ী না হয় তাহলে এটি সত্যিই দুশ্চিন্তার বিষয়।

শেষ কোথায়? কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্যানেল থেকে কোনো একটি মহামারীর আশঙ্কা করা হচ্ছিল। মহামারীটি কোথা থেকে কীভাবে আসতে পারে, তার ধারণা পাওয়ার আগেই মানুষকে সংক্রমিত করেছে। করোনা অথবা অন্য কোনো ভাইরাসের সংক্রমণ এবং সংক্রমণ থেকে সৃষ্ট মহামারী এখানেই শেষ নয়। বিজ্ঞানীরা ভবিষ্যতে আরো করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন। আরো অনেক সংক্রমণ ভাইরাসজনিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মনে রাখতে হবে পৃথিবীতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের একমাত্র হুমকি হলো ভাইরাস। তা অনেক কাল ধরে হয়েছে। এখনো হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো হওয়ার আশঙ্কা আছে। 

(তথ্যসূত্র: বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র, ভাইরোলজি বই প্রতিষ্ঠিত ভাইরোলজিস্টদের লেকচার)

 

. মুহাম্মদ নুরে আলম ছিদ্দিকী: ভাইরাস গবেষক, লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন