যুক্তরাষ্ট্রে আশঙ্কাজনকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর রাজ্য সরকারগুলো স্টে অ্যাট হোম নির্দেশনা জারি করে, লাখ লাখ আমেরিকান সংক্রমণ এড়ানোর জন্য কয়েক মাস ধরে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। এর ফলে দেশজুড়ে অভিভাবকরা চিকিৎসাসংক্রান্ত চেকআপ বাতিল করেছেন এবং ভ্যাকসিন প্রতিরোধযোগ্য রোগের জন্য টিকাদান কর্মসূচি আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনের একটি অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মে মাসে জানিয়েছিল, মহামারীর কারণে শিশুদের ভ্যাকসিনের নিয়মিত আদেশগুলো হ্রাস পেয়েছে।  ফিলাডেলফিয়ার একটি শিশু হাসপাতালের গবেষণা বিজ্ঞানী অ্যাঞ্জেলা শেষ বলেছেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা ভ্যাকসিন প্রতিরোধযোগ্য রোগের মহামারী ছড়িয়ে দেব না।

দেশজুড়ে বসন্ত পোলিওর মতো অসুস্থতার জন্য মহামারীটি কীভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে প্রভাবিত করছে তার আরো বিশদ চিত্র পেতে সায়েন্টিফিক আমেরিকান সবগুলো রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে তথ্য চেয়ে আবেদন করে। ৫০টি রাজ্য ওয়াশিংটন ডিসির কাছে আবেদন করলেও কেবল ৩৪ স্বাস্থ্য সংস্থা তথ্য সরবরাহ করেছিল।

তাদের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক মহামারী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার দেড় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। গত মার্চে ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় টিকাদানের শতকরা হার সবচেয়ে কম ছিল ওয়াশিংটন ডিসিতে। সেখানে গত বছরের তুলনায় টিকাদান ছিল ৪৪ দশমিক শতাংশ। এই হারের কাছাকাছি টেক্সাসে ৪৪ দশমিক মন্টানায় ৪৬ দশমিক শতাংশ ছিল। গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় বছরের এপ্রিলে টিকাদান সবচেয়ে কম ছিল মেরিল্যান্ডে ৪২ দশমিক শতাংশ, মন্টানা ৪৪ দশমিক পেনসিলভানিয়ায় ৪৮ দশমিক শতাংশ।

চলমান মহামারীর কারণে গত ২২ মার্চ নিউইয়র্কে লকডাউন দেয়া হয়। নগরীর স্বাস্থ্য বিভাগ ভ্যাকসিন প্রয়োগ নিয়ে মূল তথ্য সরবরাহ করেনি। তবে একটি বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, লকডাউন শুরুর দুই মাসের মধ্যে আগের বছরের তুলনায় টিকাদান ৬৩ শতাংশ কমে গেছে এবং দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের মধ্যেও টিকাদান ৯১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে শহরটির বাইরে দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেয়ার সংখ্যা স্থিতিশীল ছিল।

অধিকাংশ রাজ্যগুলো মে মাসের টিকাদান সংখ্যাও সরবরাহ করেছিল এবং তারা মনে করে যে শিশুদের ভ্যাকসিনগুলো পুনরায় শুরু হতে পারে। যদিও এখনো সেই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কম রয়েছে। তবে সার্বিকভাবে রাজ্যগুলোতে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে টিকাদান বৃদ্ধি পেয়েছিল।

শেন বলেছেন, প্রতিরোধযোগ্য রোগের মহামারী বন্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে পুনরায় টিকাদান শুরু করা জরুরি। পরিবারগুলোকে টিকা নেয়ার কথা মনে করিয়ে দিতে রাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো টিকাদান নিবন্ধন ব্যবহার করতে পারে এবং সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ করতে পারে। কারণ আমরা পিছিয়ে পড়তে চাই না। কভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার পাশাপাশি প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাব রোধে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

সায়েন্টিফিক আমেরিকান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন