ইন্দোনেশিয়া ও আসামে বন্যায় অর্ধশতাধিক মানুষের প্রাণহানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুলাওয়েসি প্রদেশে আকস্মিক বন্যা ভূমিধসে অন্তত ১৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া সেখানে আরো ২৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। এদিকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ আসামে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় ২০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। খবর এপি বিবিসি।

আসামে ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে হাজারো গ্রাম পানিতে ডুবে গেছে। বাস্তুচ্যুত মানুষগুলোকে আশ্রয় দেয়ার জন্য শত শত ত্রাণশিবির তৈরি করা হয়েছে। মৌসুমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে বন্যা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু চলতি বছর নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এমনটা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কের বড় একটি এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটিতে অন্তত ৫১টি বন্য প্রাণী মারা গেছে। সরকারি কর্মকর্তারা ১০২টি প্রাণী উদ্ধার করেছেন। বন্যায় ভেসে যাওয়া থেকে বাঁচতে কিছু বাঘ গণ্ডার নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্বের এক শিংওয়ালা গণ্ডারের দুই-তৃতীয়াংশই কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে পাওয়া যায়।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে শতাধিক নৌকা মোতায়েন করেছেন কর্মকর্তারা। আসামের ২০টি জেলায় কর্তৃপক্ষ ৪৮০টি ত্রাণশিবির স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

প্রতি বছরই আসামে ভারি বর্ষণ হয় এবং এতে সৃষ্ট বন্যা ভূমিধসের ফলে বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। সময় অনেককে নিজেদের ঘরের জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে আসতে হয়। গত বছরের বিতর্কিত নাগরিক পুঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত হতে আসামের বাসিন্দাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়। অনেকে মনে করছে বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বা বন্যায় হারিয়ে যাওয়ায় অনেকের পক্ষেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেশ করা সম্ভব হবে না।

বুধবার ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র রাদিত্য জাতি বলেন, ন্যাশনাল সার্চ রেসকিউ এজেন্সির দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ১৬ জন মারা গেছেন। এছাড়া আমরা নিখোঁজ আরো যে ২৩ জনকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছিলাম, তাদের কারোরই এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে বন্যা শুরু হয়। টানা প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত তিনটি নদী প্লাবিত হলে বন্যার সূত্রপাত। বন্যার পানিতে কাদা এবং অন্যান্য বস্তুতে রাস্তা বাড়িঘর ভরে গেছে। বিমানবন্দরও প্লাবিত হওয়ার ছবি প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে।

নর্থ লুউ জেলার অন্তত ছয়টি উপজেলার চার হাজারের বেশি মানুষ বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতি বলেন, প্রাদেশিক সড়কগুলো কাদায় ডুবে গেছে। ফলে অনেক প্রধান সড়ক এখন বন্ধ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর সঙ্গে দেখা দিয়েছে যোগাযোগ বিপর্যয়।

ভারি বৃষ্টিতে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই বন্যা ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে বন উজাড়ের কারণে পরিস্থিতি দিন দিন আরো নাজুক হচ্ছে। গত জানুয়ারিতেও রাজধানী জাকার্তায় স্মরণকালের অন্যতম ভারি বৃষ্টিপাতে শুরু হওয়া আকস্মিক বন্যায় ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন