যুক্তরাষ্ট্রে মডার্নার ভ্যাকসিন ট্রায়ালে আশার আলো

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রথম পর্বে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন গবেষকরা। বায়োটেকনোলিজ কোম্পানি মডার্না ও তাদের সহযোগী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ পরীক্ষামূলকভাবে কিছু মানুষের দেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখতে পেয়েছে, এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার গতি বাড়িয়ে দিতে পারে, বিজ্ঞানীরা যেমনটি আশা করেছিলেন। 

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) গবেষকরা এই সুখবরটি দেন। ভ্যাকসিন নিয়ে এখন চূড়ান্ত ট্রায়াল বাকি রয়েছে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস বিষয়ক বিশেষ টাস্ক ফোর্সের সদস্য ড. অ্যান্থনি ফাউসি ভ্যাকসিনের এই অগ্রগতি নিয়ে সংবাদমাধ্যম এপিকে বলেন, ‘আপনি এটিকে যেভাবেই বিবেচনা করেন না কেন, এটি একটি সুখবর।’

ভ্যাকসিনটির ট্রায়ালের এই পর্যায়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ ও প্রাণপ্রযুক্তি কোম্পানি মডার্না আগামী ২৭ জুলাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপে প্রবেশ করবে। এবার করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট শক্তিশালী কিনা তা যাচাই করতে ৩০ হাজার মানুষের শরীরে এটি প্রয়োগ করে দেখা হবে।

গবেষকরা ভ্যাকসিন উন্নয়নে গত মার্চ মাস থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অবশেষে মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন তারা। ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করে দেখা যায়, কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে তাদের শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতেই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন গবেষক ও কর্মকর্তারা। 

গবেষক দলের অন্যতম ড. লিসা জ্যাকসন বলেন, ‘ভ্যাকসিনের কোন ডোজ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কতোটা কার্যকর সেটি যাচাই এবং পরবর্তী ট্রায়ালে যেতে স্পাইক প্রোটিনকে (শরীরের যে অংশ দিয়ে কোষে সংক্রমণ ঘটায় ভাইরাস) ব্লক করতে পারাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

কোনো নিশ্চয়তা নেই, যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরকার আশা করছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে। তেমনটি ঘটলে তা ভ্যাকসিন উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেকর্ড সৃষ্টি করবে। কেননা অতীতে কোনো কোনো মহামারীর ভ্যাকসিন তৈরিতে এক যুগও লেগে গেছে। 

ট্রায়ালে এক মাসের ব্যবধানে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ প্রয়োজন হয়। ট্রায়ালে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না। যদিও কিছু স্বেচ্ছাসেবক বলেছেন, ফ্লুর মতোই কিছু সাধারণ ও মৃদু উপসর্গ তাদের ছিল। যেমন- ক্লান্তিভাব, মাথাব্যথা, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসা, জ্বর ও সামান্য ব্যথা। তিনজনকে বেশি মাত্রায় ডোজ দেয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে উপসর্গের সাড়াও তীব্র মাত্রায় ছিল। 

গবেষকরা বলছেন, কিছু প্রতিক্রিয়া ছিল করোনাভাইরাসের মতোই যা ভ্যাকসিন প্রয়োগের পরপরই দেখা যায়। 

ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের ড. উইলিয়াম শাফনার বলেন, ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফলে তিনি খুশি। তিনি আশাবাদী, ট্রায়ালের শেষ ধাপই বলে দেবে, এটি আগামী বছরের প্রথম নাগাদ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মানুষের শরীরে প্রয়োগে নিরাপদ ও কার্যকর কিনা। 

সূত্র: সিএনএন ও হিন্দুস্তান টাইমস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন