একনেকে ৮ প্রকল্প অনুমোদন

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

কৃষি যান্ত্রিকীকরণে প্রায় হাজার কোটি টাকার প্রকল্পসহ আটটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১০ হাজার ১০২ কোটি টাকা। গতকাল প্রধানমন্ত্রী একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সময় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের ভার্চুয়াল ব্রিফ করেন।

মন্ত্রী জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ উন্নয়ন (ফেজ-) প্রকল্পটি হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পূর্ণ সরকারি ব্যয়ে অনুমোদন দেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, আপনারা (ডিএনসিসি) স্থানীয় সরকারের আওতায়। রাজস্ব আদায় করতে পারছেন না কেন? একদিকে বলে আমরা (স্থানীয় সরকার) স্বাধীন, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে টাকা সহায়তা চাই। দুটি বিষয় এক সঙ্গে চলতে পারে না। কভিডের কারণে অর্থায়নের ক্ষেত্রে আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে, ব্যয় সাশ্রয় করতে হবে। এমনকি গাড়ি কেনার বিষয়েও একটা বিধিনিষেধ এসেছে। আমরা তো এখন সভা করি ডিজিটালি। ফলে এখানেও অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পের কাজে বিদেশ যেতে হতো, এখন প্রয়োজন হয় না। গাড়ি ক্রয়, বিদেশ ভ্রমণসহ সব ব্যাপারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে গুরুত্ব দিতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জমির মালিকানা নিষ্কণ্টক হতে হবে। এজন্য ভূমি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা জরুরি। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জমি সুরক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।

একনেক সভায় কৃষিকে গুরুত্ব দিয়ে বড় প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রকল্প হলো তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি। প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৭৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে এটি বাস্তবায়ন হবে। এছাড়া একই মেয়াদে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে হাজার ২০ কোটি লাখ টাকা

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বিকল্প নেই জানিয়ে এমএ মান্নান বলেন, আমাদের এগিয়ে যেতে হলে কৃষিকে আধুনিক করতে হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ ব্যবহার বাড়িয়ে ফসলের ১০-১৫ শতাংশ অপচয় রোধ করা যাবে। এছাড়া চাষাবাদে ৫০ শতাংশ সময় এবং ২০ শতাংশ অর্থ সাশ্রয় করা যাবে। পাশাপাশি সমন্বিত সবজি জাতীয় ফসল আবাদ করে কৃষি যন্ত্রপাতির ৫০ শতাংশ কর্মদক্ষতা বাড়ানো যাবে। এছাড়া যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে পোস্ট হারভেস্ট ব্যবস্থাপনায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য কমানো সম্ভব হবে।

একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ফুটপাত নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ করার জন্য ভূমি রেকর্ড জরিপ অধিদপ্তরের ডিজিটাল জরিপ পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়) এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন রংপুর জোন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন