পোশাক খাত নিয়ে সানেমের জরিপ

২৪% নারীকর্মী ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিজেরা গ্রহণ করেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আর্থিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রবণতা দেশের পোশাক খাতের কর্মরত পুরুষ শ্রমিকদের থেকে নারী শ্রমিকদের মধ্যে বেশি। অন্যদিকে আর্থিক সিদ্ধান্ত নিজে নেয়ার প্রবণতা নারীদের থেকে পুরুষদের বেশি। এক জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, পোশাক কারখানায় কাজ করেন এমন ২৪ শতাংশ নারী কর্মী তাদের আয় থেকে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিজেরা গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের জীবন জীবিকার ওপর কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব মূল্যায়ন করতে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মাইক্রো ফিন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) ১৪ সপ্তাহ ধরে হাজার ৩৬৭ জন শ্রমিকের ওপর একটি জরিপ চালিয়েছে। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জরিপের ফলাফল জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিক: জেন্ডার আঙ্গিক এবং আর্থিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ শীর্ষক জরিপে অংশ নেয়া শ্রমিকরা চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ সাভারের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত আছেন। অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ নারী। জরিপে শ্রমিকদের আয় ব্যবস্থাপনা, ব্যয়, সঞ্চয় শিক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৪৪ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক নিজেদের উপার্জন ব্যবস্থাপনা নিজেরাই করে থাকেন। এক্ষেত্রে পুরুষদের মধ্যে ৬২ শতাংশ নারীদের মধ্যে ৩৯ শতাংশ উপার্জনসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়ে থাকেন। ৩৬ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক উপার্জনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অন্য কারো সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেন নারীদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ এবং পুরুষদের মধ্যে ২৩ শতাংশ।

জরিপে দেখা গেছে, ১৪ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক উপার্জনে নিজেদের যতটুকু দরকার রেখে বাকিটা অন্য কারোর কাছে দিয়ে দেন। নারীদের মধ্যে ১৫ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ১১ শতাংশ কাজ করেন। শতাংশ নারী গার্মেন্ট শ্রমিক তাদের উপার্জন অন্য কাউকে দিয়ে দেন, যারা ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। নারীদের মধ্যে শতাংশ পুরুষদের মধ্যে শতাংশ অন্য কারোর হাতে তাদের উপার্জন তুলে দেন।

 অর্থ ব্যয়সংক্রান্ত বিষয়ে জরিপের ফল বলছে, অর্থ ব্যয়ের সিদ্ধান্ত কে নেয়, প্রশ্নের উত্তরে ২৯ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত তারাই নেন। নারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ ব্যয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ নিজেরাই করেন। অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে সিদ্ধান্ত নেন। নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ জানান যে ব্যয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পুরো পরিবার মিলে গ্রহণ করেন। বাকি ১০ শতাংশ জানিয়েছেন যে অর্থব্যয়ের সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নিয়ে থাকেন। নারীদের মধ্যে ১০ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে শতাংশ এটি জানিয়েছেন। 

সঞ্চয় ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত বিষয়ে জরিপের সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কে নেয়, এমন প্রশ্নের উত্তরে ৩৫ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন তারা নিজেরাই নেন। সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নারীরা কম গ্রহণ করেন বলে জানিয়েছেন। নারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেন। ৫৫ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন, সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাসহ পুরো পরিবারের সঙ্গে মিলে গ্রহণ করেন। নারীদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ৪২ শতাংশ পুরো পরিবারের সঙ্গে মিলে সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেন। শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন, সঞ্চয়সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নেন। শতাংশ উত্তর দেননি।

জরিপের শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কে নেয়, প্রশ্নের উত্তরে ২৬ শতাংশ গার্মেন্ট শ্রমিক জানিয়েছেন, তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন। নারীদের মধ্যে ২৩ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ নিজেদের সন্তানদের শিক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। ৬৭ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন যে সন্তানদের শিক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পুরো পরিবার মিলে গ্রহণ করে। যারা শিক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পরিবারের সঙ্গে মিলে নেন, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ নারী ৫৫ শতাংশ পুরুষ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শতাংশ জানিয়েছেন যে অন্য কেউ তাদের সন্তানদের শিক্ষাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন