ঢাকার চারপাশের নদ-নদীতে শুধু নয়, ঢাকার মধ্য দিয়ে নৌযান চলাচল সম্ভব বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের উদ্ধারকৃত তীররক্ষা প্রকল্প পরিদর্শন এবং বিরুলিয়ায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের শুধু চারটি নদী নয়, অনেকগুলো খাল আছে যেগুলো দখল হয়ে গেছে। এছাড়া আদি বুড়িগঙ্গাও অনেক ক্ষেত্রে ভরাট ও দখল হয়ে গেছে। এগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত অনুমোদন করেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সিটি করপোরেশন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করবে। মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করতে পারলে ঢাকার চারপাশের নদীতে শুধু নৌ চলাচল নয়, ঢাকার মধ্য দিয়ে নৌ চলাচল সম্ভব।
তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর যে কত বেশি প্রয়োজন, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও কেউ বেশি অনুভব করে না। ঢাকার চারপাশের নদীর প্রবাহ ঠিক রেখে দখলমুক্ত করে মানুষের বসবাস এবং জীবন-জীবিকার যেন একটা জায়গা হয়, সেই চিন্তা থেকে অনেকগুলো প্রকল্প আমরা নিয়েছি। সেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমাদের প্রথমে অবৈধ দখল মুক্ত করতে হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা নদীতীরের ৯০ ভাগ দখলমুক্ত করতে পেরেছি। সীমানা পিলার দৃশ্যমান, পাকা দেয়াল এবং ওয়াকওয়ের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পের কাজের গতিশীলতা আনায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পনা কমিশনে সংশোধিত প্রকল্প পাঠানো হয়েছে, সেটি অনুমোদিত হলে নদীতীরের কাজগুলো আরো বেশি টেকসই হবে। ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত জায়গায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর কার্যক্রম ধারাবহিকভাবে চলমান থাকবে। সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা হবে।
বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদের সংযোগস্থলে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আসলামুল হকের মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরও কিছু জায়গা নতুন করে দখল করা হচ্ছে—এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের একটি অভিযান এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে। আমরা কিন্তু ছাড় দিইনি। আমরা আগেই বলেছি, দখলদারকে দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করেছি, অন্য কোনোভাবে নয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পাওয়ার প্লান্ট দেয়া হয়েছে। নদী দখল করে পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণের কোনো চুক্তি হয়নি। কাজেই যে যেই কাজ করবে, তাকে সেই ফল ভোগ করতে হবে।