উইঘুর নিপীড়ন ইস্যু

ওয়াশিংটনকে জবাব দিতে পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বেইজিংয়ের

বণিক বার্তা ডেস্ক

উইঘুর মুসলমানদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি চার চীনা কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দুই মার্কিন সিনেটর, প্রতিনিধি পরিষদের এক সদস্য, একটি আন্তর্জাতিক সংগঠনে মার্কিন প্রতিনিধি একটি সরকারি সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বেইজিং। তবে তাদের ওপর কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হবে, তা স্পষ্ট করেনি চীন। খবর রয়টার্স বিবিসি।

চীনা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দুই সিনেটর হলেন টেক্সাসের টেড ক্রুজ ফ্লোরিডার মার্কো রুবিও। রিপাবলিকান দুই সিনেটরই উইঘুর ইস্যুতে চীনা কর্মকর্তাদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের নেপথ্য কারিগর। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার খড়্গ নেমে এসেছে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্য ক্রিস স্মিথ, লার্জ ফর ইন্টারন্যাশনাল রেলিজিয়াস ফ্রিডমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি স্যাম ব্রাউনব্যাক ইউএস কংগ্রেসনাল-এক্সিকিউটিভ কমিশন অন চায়নার ওপরও। ক্রুজ রুবির মতো ক্রিস স্মিথও উইঘুর, হংকং নভেল করোনাভাইরাস ইস্যুতে চীনের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তা চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভয়ানক হস্তক্ষেপের শামিল। এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি লঙ্ঘন করেছে। এর মাধ্যমে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি জানান, চীন চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। এর ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বেইজিং। তবে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

উইঘুর ইস্যুতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া চীনা কর্মকর্তারা হলেন ক্ষমতাসীন চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) পলিটব্যুরোর সদস্য চেন কাংগুয়ো, জিনজিয়াং জননিরাপত্তা ব্যুরোর পরিচালক ওয়াং মিংশান, সিপিসি জিনজিয়াংয়ের অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য জু হাইলুন সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুয়ো লিউজুন।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ মানবাধিকার কর্মীরা অনেকদিন ধরেই চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য জিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানদের ওপর সরকারের নিপীড়নের অভিযোগ জানিয়ে আসছে। পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, উইঘুর অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষকে আটক, ধর্মীয় নিপীড়ন নারীদের জোর করে বন্ধ্যা বানানোর মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজ করছে জিনপিং প্রশাসন। সমালোচকদের অনুমান, জিনজিয়াং কর্তৃপক্ষ নতুন দীক্ষায় দীক্ষিত করার নামে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় অন্তত ১০ লাখ সংখ্যালঘু মুসলমানকে বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক করে রেখে তাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।

চীনের বিরুদ্ধে ফ্রান্স-জার্মানির উদ্যোগে শামিল সুইডেন হংকংয়ে জোর করে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বোঝা চাপিয়ে দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় চীনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স জার্মানি। প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে সুইডেন। এর আগে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগে শামিল হয় ডেনমার্ক নেদারল্যান্ডস।

সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানি লিন্ডে গতকাল ব্রাসেলসে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে এক বিবৃতিতে জানান, জার্মানি ফ্রান্স চীনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। আমি প্রস্তাবে সমর্থন জানাচ্ছি। কারণ হংকংয়ে যা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।

পশ্চিমা অন্যান্য দেশের মতো ইইউ সদস্য দেশগুলোও চীনের পার্লামেন্টে জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাসের মাধ্যমে হংকংয়ের জনগণের স্বাধীনতা হরণের উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন