মানসিকভাবে শক্ত থাকতে চিত্রকর্ম দেখা উচিত

করোনায় প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে তার চিরাচরিত রূপ। দীর্ঘদিন মানুষের ঘরে থাকা, যানবাহনের চলাচল হ্রাস, কল-কারখানা বন্ধ থাকায় প্রকৃতি বেশ খানিকটা জিরিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। নান্দনিক প্রকৃতি বাঁধন খুলে যেন মেলে ধরেছে তার সবটুকু সৌন্দর্য। সেই প্রকৃতির সৌন্দর্য ভরা দৃশ্য নিয়েই রাজধানীর উত্তরায় গ্যালারি কায়ায় গত ২৬ জুন শুরু হয়েছে চিত্র প্রদর্শনী সেলিব্রেটিং নেচার এটি চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। গ্যালারির পাশাপাশি প্রদর্শনীটি গ্যালারি কায়ার ফেসবুক পেজে উপভোগের সুযোগ রয়েছে। করোনার সময় অনলাইনেই বরং চিত্রকর্ম দেখার জন্য বেশি উৎসাহিত করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রদর্শনীটি নিয়ে সম্প্রতি টকিজের সঙ্গে কথা বলেছেন শিল্পী গ্যালারি কায়ার পরিচালক গৌতম চক্রবর্তী সাক্ষাত্কার নিয়েছেন রাইসা জান্নাত

করোনাকালে প্রদর্শনী কেমন চলছে? গ্যালারিতে অডিয়েন্সের উপস্থিতি কী রকম?

আমরা আসলে সময় অডিয়েন্সদের গ্যালারিতে আসতে উৎসাহিত করছি না। আমাদের পুরো আয়োজনটি হচ্ছে অনলাইনে। আমাদের টার্গেট অডিয়েন্স রয়েছে। তাদের চিত্রকর্মগুলোর ছবি পিডিএফ করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু চিত্রকর্মের ছবি ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করেছি।


কেউ যদি গ্যালারিতে গিয়ে প্রদর্শনীটি উপভোগ করতে চায়, সে সুযোগ আছে কিনা?

গ্যালারিতে এসে দেখার সুযোগটা সীমিত। বলতে গেলে নেই। কারণ প্রদশর্নীতে ১৯ জন শিল্পীর ১২০টি চিত্রকর্ম রয়েছে। এসব কাজের মধ্যে ২০ শতাংশ চিত্রকর্ম আমাদের হাতে রয়েছে। আর বাকিগুলো শিল্পীদের কাছে। অনলাইনে চিত্রকর্মগুলো দেখে যখন কেউ পছন্দ করছেন, তখন একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো শিল্পীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি আমরা। শুরুর দিনটিতে শুধু গণমাধ্যমকর্মীদের বলা হয়েছে। যখন যারা আসতে চেয়েছেন, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাদের আসতে বলা হয়েছে, যাতে একসঙ্গে অনেক মানুষের উপস্থিতি তৈরি না হয়। মোবাইল ফোন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মূলত আমাদের কাজকর্ম চলছে।

প্রদর্শনীর তো কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী ছিল না...

না, আমাদের পরবর্তী প্রদর্শনীগুলোর ক্ষেত্রেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনীর বিষয়টি আপাতত রাখা হবে না। আমরা একটা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট দিনে প্রদর্শনীর পিডিএফ ফাইলগুলো টার্গেট অডিয়েন্সদের কাছে পাঠিয়ে দেব। এটাকেই আপাতত উদ্বোধনী আয়োজন হিসেবে ধরে নেব।


পরবর্তী প্রদর্শনীর কথা বললেন। সামনে কি আরো নতুন প্রদর্শনীর পরিকল্পনা রয়েছে?

সাধারণত আমাদের কমপক্ষে এক বছরের পরিকল্পনা নেয়া থাকে। বছরের জন্যও নানা পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় চার মাস ধরে তো কিছুই করা হয়ে ওঠেনি। যে পরিকল্পনাগুলো নেয়া হয়েছিল, সেগুলোই এখন এক এক করে বাস্তবায়ন করা হবে। ঘরবন্দি থাকার দীর্ঘ সময় পর সেলিব্রেটিং নেচার-এর মধ্য দিয়ে প্রদর্শনীর শুরু হলো। মাসের শেষ দিকে নতুন প্রদর্শনী আয়োজনের কথা রয়েছে।

অনলাইনে প্রদর্শনীর কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

এখন তো একটা খারাপ সময় চলছে। মানুষ আতঙ্কে আছে। তাদের আয়ের পথ সীমিত হয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার বেকার হয়ে পড়ছেন। ঢাকা ছেড়েও অনেকে চলে যাচ্ছেন। রকম একটা পরিস্থিতিতে যতটুকু সাড়া পাচ্ছি, সেটাকে আমি ভালো বলব। স্বাভাবিক অবস্থায় যে রকম সাড়া পেতাম, সে রকম হয়তো নয়। তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, আমরা তো ভেবেছিলাম তেমন সাড়া পাব না। কিন্তু না, পরিস্থিতির তুলনায় মানুষের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি।


প্রদর্শনীর চিত্রকর্মগুলো কোনো না কোনোভাবে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। করোনার কারণেই কি প্রদর্শনীর বিষয়বস্তু হিসেবে প্রকৃতিকে বেছে নেয়া হয়েছে?

প্রদশনীর জন্য যে সংগ্রহগুলো আমরা নিয়ে আসি, সেগুলোর নাম দেয়া হয় সেলিব্রেটিং নেচার আসলে শিল্পীদের  বড়সংখ্যক কাজই কিন্তু প্রকৃতির মাঝে থেকে, প্রকৃতিকে নিয়ে হয়। প্রদর্শনীতে প্রকৃতি নিয়ে ল্যান্ডস্কেপ, স্টাডি ধরনের চিত্রকর্ম যেমন আছে আবার প্রকৃতি সম্পর্কিত ব্যতিক্রমী কাজও কিন্তু রয়েছে।

করোনার সময় আপনি যে উদ্যোগটি নিয়েছেন, অন্যান্য শিল্পী গ্যালারি পরিচালকদেরও ধীরে ধীরে রকম উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন কিনা?

অবশ্যই। করোনার কারণে আমরা হয়তো বাইরে বের হচ্ছি না। কিন্তু আমাদের যার যা কাজকর্ম তা কিন্তু করতেই হবে। আমি বলব, মানসিকভাবে শক্ত থাকতে গান শোনা, চিত্রকর্ম দেখা, সংগ্রহ করাআমাদের প্রাত্যহিক কাজগুলো বহাল রাখা প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন