ভেহিকল ফিন্যান্সিং ইউনিটে অনিয়মের তদন্ত করেছে এইচডিএফসি ব্যাংক

বণিক বার্তা ডেস্ক

নিজেদের ভেহিকল ফিন্যান্সিং ইউনিটের লোন প্রদান কার্যক্রমে অনৈতিক চর্চার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সম্পন্ন করেছে এইচডিএফসি ব্যাংক লিমিটেড। একই সঙ্গে ইউনিটটির প্রধান থাকা অবস্থায় অশোক খান্না কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করেছেন কিনা, সে বিষয়েও খতিয়ে দেখছে তারা। বিষয়টিতে ওয়াকিবহাল সূত্র তথ্য জানিয়েছে। তবে তদন্তের ফলাফল এখনো জনসমক্ষে আনা হয়নি। খবর ব্লুমবার্গ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এইচডিএফসি ব্যাংক। অশোক খান্না ১৮ বছর ধরে ব্যাংকটির সঙ্গে যুক্ত। তিনি এর ভেহিকল ফিন্যান্সিং ইউনিটের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত মার্চে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়ান। যদিও ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাকে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত আরো ছয় মাস ধরে রাখতে চেয়েছিল। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার পর সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা।

৬৩ বছর বয়সী অশোক খান্নাকে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে অপসারণ করা হয়নি। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিয়ম মেনে অবসর নেন তিনি। যদিও ২০১৭ সালেই তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছরে বিভিন্ন দফায় তার মেয়াদ বাড়িয়েছে এইচডিএফসি।

ভেইকল ফিন্যান্সিং এইচডিএফসির একটি গুরত্বপূর্ণ ইউনিট। ব্যাংকটির মোট লোন বুকের ১০ শতাংশের বেশি জুড়ে রয়েছে ইউনিট। তেমনি এর প্রধান হিসেবে অশোক খান্নাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন ব্যাংকের কাছে। কারণেই তার মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়ানোর চিন্তা করেছিল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে ব্যাংকের দীর্ঘদিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আদিত্য পুরির অবসর পর্যন্ত ইউনিটটির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতেই এমন পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অক্টোবরে বয়স ৭০ বছর পূর্ণ হওয়ায় রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী অবসরে যাবেন আদিত্য। ২৬ বছর ধরে তিনি প্রতিষ্ঠানটির এমডির দায়িত্বে রয়েছেন।

একটি অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায় এইডিএফসির ভেহিকল-ডিলার ল্যান্ডিংয়ে অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে। এছাড়া ব্যাংকের অর্থায়নকৃত গাড়িগুলোর জন্য গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) কেনার মাধ্যমে খান্না ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করে থাকতে পারেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউনিটটির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে লাখ ২০ হাজার কোটি রুপির ( হাজার ৬০০ কোটি ডলার) বেশি।

এইচডিএফসির একজন মুখপাত্র ভেহিকল ফিন্যান্সিং ইউনিটে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি এর ফলাফল নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি। অবশ্য তিনি জানান, চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত মার্চেই অবসরে গেছেন অশোক খান্না।

এক -মেইল বার্তায় তিনি বলেন, যেকোনো অভিযোগের বিষয়েই তদন্তের জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়ায় রয়েছে ব্যাংকটির। তদন্ত শেষে সে অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়। ভেহিকল ইউনিটের অভিযোগের ক্ষেত্রেও সে প্রক্রিয়াই অনুসরণ করা হয়েছে।

এদিকে অশোক খান্না তদন্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এটি একান্তই ব্যাংকের নিজস্ব বিষয়। তবে ব্যাংকের পক্ষ থেকে তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কোনো প্রস্তাব দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি। খান্না জানান, চুক্তি অনুযায়ীই গত মার্চে অবসরে যান তিনি।

অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্তের খবর প্রকাশের পর এইচডিএফসি ব্যাংকের শেয়ারদর পড়ে গেছে। গতকাল মুম্বাইয়ে শেয়ারটির দর দশমিক শতাংশ কমে যায়। যেখানে এদিন শীর্ষ ১০ ব্যাংককে নিয়ে গঠিত সূচক এসঅ্যান্ডপি বিএসই ব্যাংকেক্স বেড়েছে দশমিক শূন্য শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন