জয়পুরহাট চিনিকল

টানা তিন মাস বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিকরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি জয়পুরহাট

নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে টানা তিন মাস বেতন পাচ্ছেন না জয়পুরহাট চিনিকলের শ্রমিকরা। ফলে বেতন না পেয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। বাধ্য হয়ে বেতনের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছেন শ্রমিকরা। যদিও চিনিকল কর্তৃপক্ষ বলছে, মজুদ চিনি বিক্রি হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।

চিনিকল সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট চিনিকলে এক হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। গত ২০১৯-২০ মাড়াই মৌসুমে চিনিকলে আখের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ হাজার টন। আর সময় কৃষকদের কাছ থেকে আখ ক্রয় করা হয় প্রায় ৫৪ হাজার টন, যা থেকে সাড়ে হাজার টন চিনি হাজার টন চিটগুড় উৎপাদন হয়। কিন্তু মৌসুম শেষে এখন পর্যন্ত ১১ কোটি টাকার চিনি, কোটি টাকার চিটগুড় মজুদ থাকলেও গত তিন মাস বেতন দেয়া হয়নি শ্রমিক-কর্মচারীদের।

বেতন না পাওয়া শ্রমিক রমজান আলী বলেন, সাতজনের সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। টানা তিন মাস বেতন না পেয়ে অভাবে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে খেয়ে না-খেয়ে পরিবারের সদস্যদের দিন কাটাতে হচ্ছে।

আরেক শ্রমিক ফিরোজ হোসেন বলেন, বয়স্করা পরিস্থিতি বুঝতে পারলেও শিশুদের কোনোভাবে সামলানো যাচ্ছে না। তারা ভাত মাছ খেতে চায়। কিন্তু না পেয়ে কান্নাকাটি করে। বাধ্য হয়ে পরিবারের কথা ভেবে রিকশা চালাচ্ছি।  

এদিকে গতকাল সকাল ৮টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চিনিকলের সামনে রাস্তায় অবরোধ   বিক্ষোভ মিছিল করেন প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী। বিক্ষোভ মিছিল শেষে চিনিকল চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য দেন জয়পুুরহাট চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আলী আখতার, সহসভাপতি সমলেম হোসেন বিশ্বাস, সহসাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকি মাহমুদ, ইলিয়াস বিশ্বাস রিপন প্রমুখ।

জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহসাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক জুয়েল জানান, গত তিন মাসের মূল বেতন, গ্র্যাচুইটি, এরিয়া বিলসহ প্রায় ১৫ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। বেতন না পাওয়ায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। এজন্য ঈদুল আজহার আগেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানান তিনি।

বিষয়ে জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ আবু বকর বলেন, রিফাইনার চিনি বাজারে কেজিপ্রতি থেকে টাকা কমে যাওয়ায় দেশীয় চিনির চাহিদা কম। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক চিনি বিক্রি করেই বকেয়া বেতন পরিশোধ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাজারে চিনি বিক্রি হলেই শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন শিগগিরই পরিশোধ করা হবে। করোনার এই সংকটকালে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন