করোনা পরিস্থিতিতেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে জনমনে আতঙ্ক এখনো রয়ে গেছে। অর্থনীতিতেও এর প্রভাব সুস্পষ্ট হয়েছে। পুঁজিবাজারও এর বাইরে নেই। অবস্থায় গত পাঁচদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহের চার কার্যদিবস আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল দেশের পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল হাজার ৬২ পয়েন্টে। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল প্রায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দিন শেষে ৯৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এর আগের দিন ছিল ৯৩৯ পয়েন্টে। ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ দিনের ব্যবধানে ১৪ পয়েন্ট বেড়ে গতকাল হাজার ৩৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ছায়েদুর রহমান পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজার আরো আগেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। দেশের পুঁজিবাজারের বর্তমান পিই রেশিও অনেক কম। অবস্থায় এটিই বিনিয়োগের সুবর্ণ সময়। ফ্লোর প্রাইস নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি উত্কণ্ঠা ছিল যে এটি উঠে গেলে বাজার আবারো পড়ে যাবে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে বাজার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইস উঠছে না। ফলে এতদিন যেসব বিনিয়োগকারী সাইডলাইনে ছিলেন, তারাও বাজারে আসতে শুরু করেছেন। আশা করছি সামনের দিনগুলোতে পুঁজিবাজার আরো গতিশীল হবে।

গতকাল ডিএসইতে মোট ২৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৩৪৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ৫৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৬৮টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ খাত। ১৩ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। তৃতীয় সর্বোচ্চ শতাংশ দখলে নিয়েছে ব্যাংক খাত। শতাংশ করে দখলে ছিল টেলিযোগাযোগ আর জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতের।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস, এমএল ডায়িং, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, অরিয়ন ইনফিউশনস, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, মুন্নু সিরামিকস গ্রামীণফোন। 

দর বাড়ার শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ছিল এমএল ডায়িং, জি কিউ বলপেন, আইটিসি, এমজেএলবিডি, বিডি অটোকারস, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স।

অন্যদিকে গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে দরপতনের শীর্ষে থাকা কোম্পানিগুলো হচ্ছে পূবালী ব্যাংক লি., তাল্লু স্পিনিং, ঢাকা ডায়িং, অ্যাপোলো ইস্পাত, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, মেট্রো স্পিনিং, জেনারেশন নেক্সট, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স লংকাবাংলা ফিন্যান্স।  

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স সূচক দিনের ব্যবধানে ৪১ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৩০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল হাজার ৯৮৯ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২০৮টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ৩৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০৪টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন