মহামারীর সিনেমা: ‘স্লিদার’

পৃথিবীতে পরজীবী এলিয়েনের আক্রমণ

ফিচার ডেস্ক

দক্ষিণ ক্যারোলাইনার হুইসলি শহরে একদিন একটি উল্কাপাত হয়। উল্কাপিণ্ডের সঙ্গে এক ধরনের হিংস্র পরজীবীও পৃথিবীতে প্রবেশ করে। সেটি শহরের অধিবাসী গ্রান্টের শরীরে ঢুকে তাকে আক্রান্ত করে ফেলে। এরপর গ্রান্ট হিংস্র দানবাকৃতির মানুষে পরিণত হয়। সেই পরজীবী শূককীট গ্রান্টের দেহের পাশাপাশি মস্তিষ্ককেও অধীন বানিয়ে ফেলে। এরপর গ্রান্ট ব্রেন্ডা নামে স্থানীয় এক নারীকে আক্রমণ করে তাকে আক্রান্ত করে ফেলে। শুরু হয় শহরজুড়ে মৃত্যু আর জম্বির খেলা।

এমন গল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে স্লিদার চলচ্চিত্রের কাহিনী। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী হরর ঘরানার ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালে। তবে ছবিটিতে দেখানো অতিরিক্ত হিংস্রতা এটি সব বয়সের দর্শকদের দেখার ক্ষেত্রে সীমা টেনে দিয়েছে। ছবিটির বিশেষ দিক হলো, ছবিতে দেখানো হিংস্র পরজীবী আসলে এক ধরনের এলিয়েন প্রাণী, যা পৃথিবীর মানুষকে ধ্বংস করে দিতে চায়।

ছবির গল্পে দেখা যায়, আক্রান্ত হওয়ার পর গ্রান্ট তার স্ত্রী স্টারলার কাছে বাড়িতে আসে। কিন্তু তার দেহের আকৃতি পরিবর্তন, ব্যবহারের পরিবর্তন এবং চাহনি স্টারলাকে সন্দিহান করে তোলে। কারণে গ্রান্ট স্টারলাকে আক্রমণ করতে যায়। কিন্তু তখনই পুলিশ স্টারলাকে উদ্ধার করতে এলে গ্রান্ট পালিয়ে যায়। পুলিশ তার পিছু নিলে তারা ব্রেন্ডাকে আবিষ্কার করে। তার সারা শরীরে লাল এক ধরনের ছোট সাপের মতো শুককীট ঘুরে বেড়াচ্ছে। যখন সে পুলিশের কাছে সাহায্যের আবেদন করে তখনই তার পেট ফুটো করে বেরিয়ে আসে আরো অনেকগুলো শুককীট। এরপর সেগুলো পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে মানুষকে আক্রমণ করতে থাকে।

শহরের অনেকেই আক্রান্ত হলেও স্টারলা তার সঙ্গে থাকা বিল, মেয়র জ্যাক ম্যাকরেডি এবং কাইলি স্ট্রুটেমেয়ারকে কোনো শুককীটই আক্রমণ করে না। তখন তারা বুঝতে পারে, গ্রান্ট আসলে সব শুককীটকে নিয়ন্ত্রণ করছে। গ্রান্ট আসলে তার স্ত্রী স্টারলাকে তার ভালোবাসা বোঝানোর জন্যই আক্রমণ করা থেকে বিরত রেখেছে। তখন সুস্থ কয়েকজন মিলে সিদ্ধান্ত নেয়, স্টারলার মাধ্যমে গ্রান্টকে ধ্বংস করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তারা গ্রান্টকে আক্রমণ করার আগেই শহরের অন্যান্য আক্রান্ত মানুষ তাদের আক্রমণ করে বসে। স্টারলা আর জ্যাককে বন্দি করে তারা গ্রান্টের কাছে নিয়ে যায়। তবে বিল আর কাইলি কোনোমতে পালাতে সক্ষম হয়।

এরপর বিল আর কাইলি মিলে আগ্নেয়াস্ত্র আর হ্যান্ড গ্রেনেড নিয়ে গ্রান্ট যেখানে অবস্থান করছে সেখানে যায়। গ্রান্ট তখন জ্যাককে অন্যান্য আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ছেড়ে দেয় তাদের খাদ্য হিসেবে। আর স্টারলাকে সে ভালোবাসা বোঝানোর চেষ্টা করে। পুরো শহরের সব মানুষ আক্রান্ত। এখন মাত্র তিনজন মানুষ সুস্থ আছে। তারা অকৃতকার্য হলে ধীরে ধীরে তা পুরো শহর থেকে পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু যেই মাত্র বিল আর কাইলি গ্রান্টকে আক্রমণ করতে যায়, তারাও ধরা পড়ে যায়।

৯৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিটি ২০০৬-এর ৩১ মার্চ মুক্তি পায়। মুক্তির পর পরই সমালোকচদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়াতে থাকে। অন্যান্য হরর ছবির মতো চিরচারিত বিষয়গুলো না দেখিয়ে একটু ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হয়েছে। জেমস গানের লেখা পরিচালনায় ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন এলিজাবেথ ব্যাংকস (স্টারলা), মাইকেল রুকার (গ্রান্ট), নাথান ফিলিওন (বিল), তানিয়া সলিনার (কাইলি), গ্রেগ হেনরি (জ্যাক) প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন