সিরিয়া সীমান্ত হয়ে ত্রাণ পাঠানোর অনুমোদন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের

বণিক বার্তা ডেস্ক

সিরিয়ায় নতুন করে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু করতে প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। শনিবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদে ১২ ভোটে প্রস্তাবটি পাস হয়। রাশিয়া, চীন ডমিনিকান প্রজাতন্ত্র ভোটদানে বিরত ছিল। তবে রাশিয়ার চাপের মুখে শুধু একটি সীমান্ত পথ দিয়ে ত্রাণ সরবরাহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তুরস্ক সংলগ্ন বাব আল হাওয়া সীমান্ত ব্যবহার করে আগামী এক বছর ত্রাণ সরবরাহের কাজ চালানো যাবে। খবর গার্ডিয়ান রয়টার্স।

নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনক্রমে ২০১৪ সাল থেকে সিরিয়ায় ত্রাণ সরবরাহ করে যাচ্ছে জাতিসংঘ। গত শুক্রবার মস্কো বেইজিং ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করলে এর মেয়াদ শেষ হয়। সিরিয়ার সরকারের মিত্র দেশ রাশিয়া উত্থাপিত বিকল্প প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে

নিরাপত্তা পরিষদ। ২০১৪ সালে জর্দান ইরাক সীমান্ত হয়ে ত্রাণ পাঠানোর বিষয়টিও অনুমোদন করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া চীনের বিরোধিতায় গত জানুয়ারিতে ওই পথগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাশিয়া দাবি করে আসছিল ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে বাব আল সালাম সীমান্ত পথ বন্ধ করে দেয়ার জন্য। পথটি সিরিয়ার আলেপ্পোর সঙ্গে সংযুক্ত। জার্মানি আর বেলজিয়ামের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয় যেন শুধু বাব আল হাওয়া সীমান্ত পথ ব্যবহার করা হয়। আর ইইউভুক্ত অন্য দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল দুই পথই ব্যবহার করতে। এছাড়া সীমান্ত পথ অনুমোদনের বিষয়টি এক বছরের জন্য নাকি ছয় মাসের জন্য হবে সে বিষয়েও বিভক্ত মতামত আসে। শেষ পর্যন্ত এক বছরের জন্য একটি পথ নির্ধারণে জার্মানি বেলজিয়ামের প্রস্তাবটি নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী ২০২১ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত বাব আল হাওয়া সীমান্ত পথ ব্যবহার করা হবে।

জাতিসংঘে জার্মান রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফ হিউসজেন বলেন, যারা পাঁচ লাখ শিশুর কাছে ত্রাণ

পাঠানো আটকাতে চায় তাদের আয়নায় নিজের মুখ দেখা উচিত।

দামেস্ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বাস্তুচ্যুত সিরীয়দের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুমতি দিয়ে রেখেছে জাতিসংঘ। তবে রাশিয়া চীনের দাবি, এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

ভোট প্রক্রিয়া শেষে জাতিসংঘে রাশিয়ার উপদূত দিমিত্রি পলিয়ানিস্কি বলেন, সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দেশটিতে কোনো মানবিক সহায়তায় সমর্থন দিয়ে এসেছে রাশিয়া এবং তা অনুমোদিত সরকারের সঙ্গে মিলে করা উচিত বলেও মনে করে মস্কো। এটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করা উচিত নয়।

জাতিসংঘে ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত জোনাথন অ্যালেন বলেন, বাব আল সালাম সীমান্ত পথ হয়ে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো বন্ধ হওয়ায় সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকার ১৩ লাখ মানুষ ওই সহায়তা বঞ্চিত হবে।

ভোট শেষে জার্মানি বেলজিয়ামও এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, এক সীমান্ত পথে ত্রাণ পাঠানো যথেষ্ট নয়। আবার কোন পথ নিয়ে কোন অঞ্চলে সংঘাত সৃষ্টিও কাম্য নয়।

জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন জানান, সবসময়ই আন্তঃসীমান্ত হয়ে ত্রাণ পাঠানোর বিরোধিতা করে আসছে বেইজিং। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এতে বিরোধিতা করা হচ্ছে না। কোনো নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়গুলো সমন্বয় করা উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন