নভেল করোনাভাইরাস

মেহেরপুরে শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুহার বেশি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি মেহেরপুর

মেহেরপুরের গাংনী শহরের পশু হাসপাতাল পাড়ায় একই পরিবারের তিনজন করোনা পজিটিভ। তাদের পরিবারের ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা জোবাইদা খাতুনের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নমুনা সংগ্রহের জন্য বাড়িতে লোক পাঠানো হয়। কিন্তু পরিবারের লোকজন করোনা আক্রান্তের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে নমুনা নিতে দেয়নি। অবশেষে গত মঙ্গলবার সকালে মারা যান ওই বৃদ্ধা। মারা যাওয়ার পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে করোনা পজিটিভ আসে।

শুধু জোবাইদা খাতুন নন, জেলার গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের রশিদা খাতুনও করোনার কথা গোপন করেছিলেন। ফলে জ্বর, শ্বাস কষ্ট নিয়ে তিনিও মারা যান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপসর্গ গোপন করায় মেহেরপুরে মৃত্যুহার বাড়ছে। অনেকের শরীরে করোনার একাধিক উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে না। আবার অনেকে শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে যাওয়ায় তাদের বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে মেহেরপুর জেলায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত ১০০ পার না হলেও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ছয়জন। পরবর্তী সময়ে তাদের প্রত্যেকেরই করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে।

মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত মেহেরপুর জেলায় নমুনা পরীক্ষা করা হয় হাজার ৩৮টি। এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭। আক্রান্তদের মধ্যে সদরে ৫১, গাংনী ৩৮ আর মুজিবনগরে জন। মারা গেছে ছয়জন।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম জানান, জেলায় ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনই উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। মারা যাওয়ার পর তাদের নমুনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। মূলত রোগীর রোগ গোপন করার কারণে মৃত্যুহারটা বাড়ছে।

বিষয়ে মেহেরপুর সিভিল সার্জন নাসির উদ্দীন বলেন, আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহারে দেশের মধ্যে প্রথম কাতারে আছি আমরা। তবে আক্রান্তদের তথ্য গোপনের কারণে মৃত্যুহার বাড়ছে। যারা মারা গেছে, অধিকাংশের শরীরে জ্বর, ঠাণ্ডা-কাশি থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করছে না। করোনা উপসর্গ গোপন রেখে নিজেদের মনমতো চিকিৎসা নিচ্ছে। এতে একদিকে আক্রান্তের হার বাড়ছে, অন্যদিকে মৃত্যুর দিকে নিজেকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করছি। এখন প্রতিদিন যারা পরীক্ষা করাতে ইচ্ছুক, তাদের ঠাণ্ডা-জ্বরের বিষয়টি পরীক্ষার পর নির্ধারিত ফি দিয়ে করোনা পরীক্ষা করাতে পারবে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এরই মধ্যে মেহেরপুর জেলার ৮৩ হাজার মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণের কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন। যারা দরিদ্র, মাস্ক কিনতে পারবে না, তাদের বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন