রাজাপুরে খাল দখল করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি ঝালকাঠি

ঝালকাঠির রাজাপুর শহরে খাল দখল করে চলছে স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক। এক সময়ের খরস্রোতা নদী জাঙ্গালিয়ার শাখা নদীটি ভূমিদস্যুদের কারণে আজ মরা খালে আবার কোথাও নালায় পরিণত হয়েছে। সেই খাল নালা নানা কৌশলে প্রতিনিয়ত চলছে দখল। এদিকে দখল রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন দেখা গেছে, বাগড়ি বাজার থেকে শুরু করে পশ্চিম দিকে রাজাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত দুই পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে পাকা স্থাপনা, খালের মধ্যে বাঁশ-খুঁটি পিলার পুঁতে তৈরি করা হচ্ছে দোকান।

অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পেছনের খালের ওপর একাধিক দোকান বসিয়ে ব্যবসা চলছে। এছাড়া সদরের বাজারের খালে ইট-সুরকি ফেলে এবং কলেজ রোডের কালীমন্দির এলাকায় বালি ফেলে খাল ভরাট করা হয়েছে। এমনকি বাজারের সিঁড়ি পুরোপুরি ঢেকে ফেলা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

এছাড়া সদরের মাছবাজার ব্রিজের উত্তর পাশে খালের মধ্যে নির্মাণাধীন পাকা ভবন নিয়ে জনমনে ক্ষোভ। বিভিন্ন স্থানে খালের মাঝ পর্যন্ত কালো পলিথিনে মুড়িয়ে আবার কাঠের ঘর নির্মাণ করে দখল করছে অনেকে। একই সঙ্গে বাগড়ি বাজার বাজারের দক্ষিণ মাথা এলাকা পর্যন্ত খালের দুপাশে চলছে ভরাট পাকা স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসব কাজ করা হচ্ছে। এজন্য দেখেও না দেখার ভান করছে প্রশাসন।

উপজেলা সদর ঘুরে দেখা গেছে, লোকচক্ষু এড়ানোর জন্য খালের চর প্রথমে বেড়া দিয়ে আগলে রাখে তা ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে খালের চর বিক্রির হিড়িক চলছে।

স্থানীয়রা জানান, মধ্যবাজার এলাকা থেকে বয়ে যাওয়া ভারানি খালটি জেলখানার পেছনের এলাকা হয়ে টিঅ্যান্ডটি সড়কের মধ্য দিয়ে বাইপাস ব্রিজ হয়ে তুলাতলার দিকে গেছে। খালটি আজ দখলের কারণে মৃতপ্রায়। এক সময় খাল দিয়ে নৌকায় করে মানুষ আসা-যাওয়া করত। কিন্তু অব্যাহত দখলে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে এটি। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানি থাকে না। কারণে শহরের কোথাও আগুন লাগলেও পানি সংকট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির উৎস পাওয়া যায় না। এছাড়া খালটি এবং এর ছোট ছোট শাখা নালা ভরাট হওয়ায় বৃষ্টি হলেই আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।

রাজাপুরের ইউএনও মো. সোহাগ হাওলাদার জানান, খালের ভিতর থেকে পাইলিংগুলো সরিয়ে চলমান প্রবাহ ঠিক রেখে জেয়ারে যতদূর পর্যন্ত পানি ওঠে, ততটুকু পর্যন্ত পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় খাল দখলকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর পুরো খালটি দখলমুক্ত করতে সীমানা নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন