লক্ষ্মীপুরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

দুটি সড়ক ৬ বার দেখিয়ে বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের দুটি সড়কের নাম ছয়বার দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দের ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অথচ ওই সড়ক দুটিতে সরকারি বরাদ্দের কোনো কাজই করা হয়নি। ঘটনায় একই পরিষদের ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে দুদকে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জুলাই দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের নাম বশির আহম্মদ মানিক। তিনি উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই সরকারি বরাদ্দের টাকা তিনি আত্মসাৎ করেন।

উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছর ৪০ দিনে কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় দেহলা জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ি থেকে সরকার বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়নে ৩৫ শ্রমিক বাবদ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থবছর একই সড়কের জন্য একই প্রকল্প থেকে আবারো ৩৫ শ্রমিক বাবদ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া পরবর্তী ২০১৯-২০ অর্থবছরে একই সড়কের নাম পরিবর্তন করে প্রকল্প দেখিয়ে ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের শতাংশ (ভূমি কর) প্রকল্প থেকে লাখ ৬৫ হাজার ৭৪৮ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব বরাদ্দের টাকারও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এদিকে একই ইউনিয়নের আথাকরা গোপাল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত সড়কটিতে মাটি দ্বারা উন্নয়নের কাবিটা প্রকল্পের ২০১৭-১৮ অর্থবছর লাখ ৮০ হাজার, একই অর্থবছর ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৫৫ জন শ্রমিক বাবদ লাখ ৪০ হাজার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে একই রাস্তার হিজবুল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত নাম পরিবর্তন করে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৩০ জন শ্রমিক বাবদ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে সড়ক দুটিতে তিন বছরে কাগজে-কলমে ছয়বার বরাদ্দ দেয়া হলেও কোনো কাজই করা হয়নি বলে অভিযোগ ইউপি সদস্য স্থানীয়দের। এতে সড়ক দুটি দিয়ে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অথচ বারবার প্রকল্প দেখিয়ে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সরকারি বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান। এতে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা।

ভোলাকোট ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন চৌধুরী জানান, পুরো ইউনিয়ন পরিষদ ইউপি চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদের কাছে জিম্মি। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কোনো উত্তর না দিয়ে উল্টো হুমকি-ধমকি অব্যাহত রাখেন। পরে কোনো উপায়ন্তর না দেখে প্রতিকার চেয়ে নোয়াখালী দুদক কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদ বলেন, একই সড়কের নামে বারবার বরাদ্দ আসার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে একটি সড়কের নামে লাখ ৮০ হাজার টাকার বরাদ্দ হয়েছিল। সেটিও ইউপি সদস্যরাই করেছেন। দুদকের কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

এদিকে রামগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলীপ দে জানান, ওই উপজেলায় গত ডিসেম্বরে যোগদান করেছেন তিনি। যোগদানের পর থেকে যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প অনুমোদন দিয়ে আসছে। তবে তার যোগদানের পূর্বে অনিয়ম হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন