সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই উপনির্বাচন —ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি কথা জানান।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এক অনলাইন আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রদত্ত নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার উদ্দেশ্য হলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বারবার ক্ষমতায় আনা। ওয়ান-ইলেভেন থেকে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে শীর্ষক বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ষড়যন্ত্রমূলক। রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ধরনের মন্তব্য দেশবাসীকে গভীরভাবে হতাশ করেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২- রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত যে বিধান রয়েছে, সেগুলো আরপিও থেকে বের করে এবং এর মৌলিক বিধান অক্ষুণ্ন রেখে বাংলায় আলাদা একটি আইন করতে যাচ্ছে। ওই প্রস্তাবিত আইনের যে খসড়া নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের জন্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, আইনের অর্থাৎ আরপিওর ওই অংশগুলো মূলত বাংলায় রূপান্তরিত করার জন্যই আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনটিতে পরিলক্ষিত হয় যে, এর আগে ব্যবহূত অধিকাংশ ইংরেজি বিদেশী শব্দের পরিবর্তে বাংলা শব্দ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোতে ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য অন্তর্ভুক্তির যে বিধান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২- সন্নিবেশিত রয়েছে, সে বিধানটি কার্যকর করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি বাস্তবসম্মত সময়সীমা নির্ধারণের জন্যই সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বিধান সর্বতোভাবে কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

করোনার মধ্যে সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব এখতিয়ার। এতে আমাদের কিছূ বলার বা করণীয় নেই। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের স্টেকহোল্ডার হিসেবে আমরা জানতে পেরেছি, মূলত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনে যেতে বাধ্য হচ্ছে। উপনির্বাচন করার ক্ষেত্রে সাংবিধানিকভাবে আরোপিত যে বাধ্যতামূলক সময়সীমা রয়েছে, তা প্রতিপালনের জন্যই নির্বাচন কমিশন করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও উপনির্বাচন করতে বাধ্য হচ্ছে বলে আমরা আইন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। এসব নির্বাচনী আসনে আমাদের এমপি ছিল; আমরাই সেখানে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলাম। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণেই নির্বাচন করছে, এটি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব কর্তব্য। এখানে আমাদের কীইবা করণীয় আছে।

তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলকে বুঝতে হবে যে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও পৃথিবীর অনেক দেশে সাংবিধানিক বাধ্যবাধতার কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া সিঙ্গাপুরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্রোয়েশিয়ায় নির্বাচন হয়েছে। ফ্রান্সে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে।

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের কথায় মনে হচ্ছে, দেশে তত দিন পর্যন্ত কোনো নির্বাচনই বিএনপির দৃষ্টিতে নিরপেক্ষ বিবেচিত হবে না, যত দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে নির্বাচনে জেতার কোনো গ্যারান্টি না দেবে। মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের কাছে বিএনপি সে ধরনের একটি গ্যারান্টি ক্লজ চাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া ফৌজদারি আইনের অধীন দেশের প্রচলিত আদালতের বিচারে প্রথমে অভিযুক্ত পরে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে ছিলেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন