স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিপরায়ণদের বিরুদ্ধে অভিযান আরো সক্রিয় করবে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিপরায়নদের বিরুদ্ধে আইনি অভিযান আরো সক্রিয় করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।   

২০১৯ সালের জন্য নেয়া এক বছর মেয়াদি কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়িত প্রতিবেদনের ওপর শুক্রবার (১০ জুলাই) এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। পূর্ণাঙ্গ কমিশনের ভার্চুয়াল সভাটি ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। 

সভার শুরুতেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত দুদকের দুই কর্মকর্তসহ দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে যারা মৃতু্যবরণ করেছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। 

সভায় দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে কমিশনের নিয়মিত অভিযান স্থগিত রাখা হলেও ত্রাণ এবং স্বাস্থ্যখাতে চিহ্নিত দুর্নীতিপরায়ণদের  বিরুদ্ধে আইনি অভিযান আরো সক্রিয় করা হবে। জনগণের কল্যাণেই এসব অপরাধীদের আইন আমলে আনা হবে।  

দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের ১৮ জনের বেশি কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দুইজন প্রতিশ্রুতিশীল কর্মকর্তা মৃত্যুবরণ করেছেন। এর  মধ্যেও আপনারা (কর্মকর্তারা) মামলা করছেন, অপরাধীদের গ্রেফতার করছেন, অভিযোগসংশ্লিষ্টদের তলব করছেন, জিজ্ঞাসাবাদ করছেন । অর্থাৎ দুর্নীতির অভিযাগের অনুসন্ধান, তদন্ত , প্রসিকিউশন,  প্রতিরোধসহ সকল প্রকার দাপ্তরিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটা আপনাদের কৃতিত্ব। সবাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে দায়িত্ব পালন করবেন।  প্রয়োজনে বাসায় বসে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।  এক্ষেত্রে অবশ্যই নথির মুভমেন্ট রেজিস্টার অনুসরণ করতে হবে এবং তা কমিশনের সচিবকে অবহিত করতে হবে।

কমিশনের মানিলন্ডারিং অনুবিভাগের কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৯ সালে কমিশনের ১১টি মানিলন্ডারিং মামলার ১১টিতেই অপরাধীদের সাজা হয়েছে। ২০১৮ সালেও শতভাগ মামলায় সাজো হয়েছিল। এককভাবে যখন দুদক মানিলন্ডারিং মামলা করতো তখন অসংখ্য মামলা দায়ের হয়েছে।  অপরাধীদের শাস্তি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থ পাচার বন্ধ করতে হলে দ্রুততর সময়ে অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে অপরাধলব্ধ সম্পদ উদ্ধার করতে হবে। এক্ষেত্রে বিএফআইউ, সিআইডি, জাতীয় রাজস্ববোর্ডসহ অন্যান্য সংস্থার মধ্যে নিবিড় সমন্বয় থাকতে হবে। কীভাবে এসব সংস্থার সাথে কার্যকর সমন্বয় করা যায়, তা কমিশনের কৌশলপত্রের আলোকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ভার্চুয়াল সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র বাস্তবায়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তাগণ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য তারা স্ব-স্ব মন্ত্রণালয় বা বিভাগের একটি দুর্নীতির খবরও কমিশনকে জানায়নি। তাদেরও জবাদিহিতার দরকার। সৎ, স্বচ্ছ ও দৃঢ়চেতা কর্মকর্তাদের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরো বলেন কমিশনের যে সব সততা সংঘ রয়েছে এদের কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে হবে। শুধু কমিটি করলে চলবে না।

দুদক কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালসহ এ জাতীয় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি দুদকের গোয়েন্দা নজদারি আরো বাড়াতে হবে।কারণ আমাদের কাছে প্রায়ই অভিযোগ আসছে -এরূপ কিছু  প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় সরকারি পরিসেবা প্রদান করছে না। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনা শুরু হওয়ার আগে যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হতো, সেভাবেই অভিযান শুরু করা হবে। 

এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়র বখ্ত, মহাপরিচালক  আ ন ম আল ফিরোজ, মো. মফিজুর রহমান ভূঞা, মো. জহির রায়হান, মো.রেজানুর রহমান, সাঈদ মাহবুব খান, মো. জাকির হোসেন প্রমুখ। সভাটি পরিচালনা করে দুদকে আইসিটি ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন